পেকুয়া থেকে অপহৃত ১ জনকে উদ্ধার করতে গিয়ে পটিয়ায় অপহরণকারী চক্রের কবল থেকে আরও ২ ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত রোববার রাত ৩টার দিকে পেকুয়া থানার এসআই রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পটিয়া থানাধীন খাসিয়াইস ইউপির নয়াহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ৩ জনকে উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। এসময় অপহরণকারী চক্রের ১ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. ইলিয়াছ (২৩)। তিনি পটিয়া উপজেলার খাসিয়াইস ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বাকখাইন এলাকার মো. আলীর পুত্র।
উদ্ধার হওয়া ভিকটিমরা হলেন, পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বুধামাঝিরঘোনা এলাকার মৃত আবু তাহেরে ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমান (২৪), একই এলাকার রহিম উদ্দিন ছেলে মো. রাইমন (২৪) ও রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউপির বড় ধলিরছড়া এলাকার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে মনজুর আলম (২৪)।
জানা যায়, পেকুয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বারবাকিয়া এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল নোমানকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার ভাই মো. রফিচ বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ৬ ঘণ্টা পর ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার ভাইয়ের মোবাইলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোন দেন অপহরণকারীরা। পেকুয়া থানা পুলিশ ভিকটিম উদ্ধারে বিশেষ অভিযানে নামেন। অপহরণকারীদের দেয়া মোবাইল নম্বরে দুই দফায় ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণও দেয়া হয়। মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ও ভিকটিমের মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে পটিয়া উপজেলার খাসিয়াইস ইউপির নয়াহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পেকুয়া থানা পুলিশ। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমসহ আরও ২ জনকে উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী দলের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
উদ্ধারের পর ভিকটিম আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমি চট্টগ্রামে মাংস সাপ্লায়ের ব্যবসা করি। পেকুয়ায় নিজ বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মইজ্জ্যারটেক এলাকা থেকে আমাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ওখানে আমি আরও দুইজনকে দেখি। অপহরণকারীরা আমাদের উলঙ্গ করে নির্মমভাবে পিটাতে থাকে। তারা এক সময় আমাদের হাতে ইয়াবা দিয়ে ভিডিও করে। ভিডিওতে বলতে বলে আমরা ইয়াবা বিক্রি করতে এসেছি।
উদ্ধার হওয়া ভিকটিম মো. রাইমন বলেন, তাদের হাতে ধারালো ছুরি ও দেশীয় অস্ত্র ছিল। তাদের চাহিদা মত পরিবার থেকে টাকা না আসলে তারা আমাদের মেরে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা বলে ভয় দেখাতো। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে যায়। এসময় একজন ভিডিও ধারণে মগ্ন থাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেছে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা বলেন, গ্রেপ্তার ইলিয়াছ একজন পেশাদার অপহরণকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তিনি এবং তার সহযোগী অপহরণকারীরা চট্টগ্রাম ও কঙবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন লোককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও আদায় করে থাকে। ইলিয়াছকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের লক্ষ্যে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।