বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এই সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতাগুলোকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন মনে করছি। সাড়ে পনেরো বছর ধরে গেড়ে বসা স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ঐতিহাসিক গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে প্রাণভয়ে বোন রেহানাকে সাথে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সামরিক বাহিনী–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত গ্রহণযোগ্য সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট তিন–চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয় অর্জন করে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ ভূমিধস বিজয় হাসিনাকে হয়তো আজীবন প্রধানমন্ত্রীর মসনদ দখল করে রাখার সর্বনাশা খায়েশে মত্ত হয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ড থেকে কোন শিক্ষা হয়নি তাঁর। ২০১০ সালে প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের ৪–৩ সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের সুবিধা নিয়ে ২০১১ সালে হাসিনা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের ব্যবস্থা করেছিলেন, যার ফলে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি একতরফা নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে সাড়ে দশ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা জবরদখলে রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন। ২০১১ সাল থেকেই সকল প্রধান বিরোধীদল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আন্দোলন–সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও হাসিনার তিনটি একতরফা নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। বরং, ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে সাড়ে দশ বছর দেশের জনগণের মনে ধারণা গেড়ে বসেছিল যে হাসিনার জীবদ্দশায় এদেশে নির্বাচনের মাধ্যমে আর সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বিশেষত, একতরফা নির্বাচনী প্রহসন সত্ত্বেও প্রতিবেশী ভারত নিজের স্বার্থে হাসিনার সরকারকে বারবার মেনে নেয়ার কারণে জনগণের হতাশা দিনদিন বেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু, হাসিনা নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে এসব নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী করায় ক্রমেই জনগণের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ক্রমবর্ধমান ক্রোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে চলেছিল যে সুযোগ পেলেই তারা একটি গণ–অভ্যুত্থান সংঘটিত করে হাসিনার সরকারকে উৎখাত করে ছাড়বে। সে সুযোগ এনে দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র–ছাত্রীদের কোটা–বিরোধী আন্দোলন–সংগ্রাম। এই তিনটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণ বরবাদ করে দিয়ে শেখ হাসিনাই গণ–অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতকে ডেকে এনেছেন। ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ দুপুর আড়াইটায় যখন পলায়নকারী শেখ হাসিনার উড়োজাহাজটি ঢাকা থেকে উড়াল দেয় তখন ঢাকার উপকন্ঠ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিল রাজপথ ধরে শাহবাগ, গণভবন ও সংসদ ভবনের দিকে ধাবিত হয়। কমপক্ষে কুড়ি লাখের মত মানুষ ঢাকায় জড়ো হয়ে গণ–অভ্যুত্থানটিকে সফল করে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি উদযাপন করে। ঐদিন গণভবনে শেখ হাসিনাকে ধরতে পারলে জনতা তাঁকে হয়তো টুকরো টুকরো করে ফেলতো!
হাসিনা তাঁর সাড়ে পনেরো বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে নিকৃষ্টতম ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের’ মাধ্যমে কিংবা ক্লেপ্টোক্রেসির মাধ্যমে তাঁর পরিবার, আত্মীয়–স্বজন, দলীয় নেতা–কর্মী, কতিপয় অলিগার্ক–ব্যবসায়ী এবং পুঁজি–লুটেরাদেরকে সাথে নিয়ে যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুন্ঠনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন তার ভয়াবহ কাহিনী তাঁর পতনের পর উদ্ঘাটিত হচ্ছে। ৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে দৈনিক বণিক বার্তার হেডলাইনের খবরে প্রকাশিত তথ্য–উপাত্তে দেখা যাচ্ছে সাড়ে পনেরো বছরে দেশের জনগণকে পনেরো লক্ষ আটান্নো হাজার দুই’শ ছয় কোটি টাকা ঋণের সাগরে ডুবিয়ে দিয়ে হাসিনা দেশ থেকে ভেগে গেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে আঠারো লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার কোটি টাকারও বেশি। অথচ, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার দিনে বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ছিল মাত্র দুই লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার আট’শ ত্রিশ কোটি টাকা। এর মানে, এই দুই ঋণের স্থিতির পার্থক্য দাঁড়িয়েছে উপরে উল্লিখিত পনেরো লক্ষ আটান্নো হাজার দুই’শ ছয় কোটি টাকা। গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়ার আগে হাসিনা এই সুবিশাল আঠারো লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার কোটি টাকার ঋণের সাগরে দেশের জনগণকে নিমজ্জিত করে প্রতি বছর মাথাপিছু জিডিপি’র উচ্চ–প্রবৃদ্ধি দেখিয়ে চলেছিলেন, যাকে বলা চলে ‘নিকৃষ্টতম শুভংকরের ফাঁকি’ ও জনগণের সাথে ভয়ানক প্রতারণা। ফলে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিজন বাংলাদেশীর মাথার ওপর এক লক্ষ টাকার বেশি ঋণ নিজেদের অজান্তেই চেপে বসে গেছে।
হাসিনার পতিত স্বৈরাচারী সরকার সাড়ে পনেরো বছর ধরে ‘ডেটা ডক্টরিং’ এর মাধ্যমে উচ্চ মাথাপিছু জিডিপি প্রবৃদ্ধির খেল্ দেখিয়ে দেশটাকে লুটেপুটে ছারখার করে দিয়েছে, যে অর্থের সিংহভাগই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এই পুঁজি–লুন্ঠনের কেন্দ্রে ছিল হাসিনা–পুত্র জয়, রেহানা–কন্যা টিউলিপ ও রেহানা–পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও তার পুত্র শেখ ফাহিম, শেখ হেলাল, তাঁর ভাই শেখ জুয়েল ও তাঁর পুত্র শেখ তন্ময়, সেরনিয়াবাত হাসনাত আবদুল্লাহ ও তাঁর পুত্র সাদিক আবদুল্লাহ, শেখ তাপস, শেখ পরশ, লিটন চৌধুরী ও নিক্সন চৌধুরী এবং হাসিনার অন্যান্য আত্মীয়–স্বজন। আর ছিল এস আলম, সালমান রহমান, সামিটের আজিজ খান, বসুন্ধরার আকবর সোবহান, ওরিয়ন গ্রুপের ওবাইদুল করিম ও নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদারের মত লুটেরা অলিগার্ক ব্যবসায়ী এবং হাজার হাজার লুটেরা রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজ আমলা। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের পুত্র সোহেল তাজ অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালেই শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘বিএনপি অনেক টাকা কামিয়েছে। এখন আমাদেরকে দু’হাতে টাকা বানাতে হবে’। শুধু একজন এস আলম নাকি ইসলামী ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকের মালিকানা জবরদখলের মাধ্যমে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। হাসিনার বেসরকারী বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান রহমান তার বেক্সিমকো গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লুটে নিয়েছে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। প্রতিটি মেগা–প্রকল্প ও দেশের শত শত প্রকল্প থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে এই সাড়ে পনেরো বছরে। উপরন্তু, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে প্রচন্ড লুটপাটের শিকার করে রেখেছিল হাসিনার সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুরের প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পৌনে সতেরো লক্ষ কোটি টাকা ব্যাংকঋণের মধ্যে কমপক্ষে ছয় লক্ষ কোটি টাকা খেলাপিঋণে পরিণত হয়েছে, যার অধিকাংশই দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ব্যবসা–বাণিজ্য সংক্রান্ত দৈনিক পত্রিকা ‘দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের’ এক সাংবাদিক দাবি করেছেন, খেলাপিঋণের প্রকৃত পরিমাণ ইতোমধ্যে সাত লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। রাঘববোয়াল ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদেরকে’ ট্রাইব্যুনালের বিচারের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে হাসিনা সরকার ছিল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়। ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টচার্যের নেতৃত্বে গঠিত অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বলেছে, এই সময়ে বছরে গড়ে ষোল বিলিয়ন ডলার করে মোট ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি লুন্ঠিত হয়েছে ব্যাংকিং খাত, এরপর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত, ভৌত অবকাঠামো খাত এবং তথ্য প্রযুক্তি খাত। বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের ২৩–৪০ শতাংশ পর্যন্ত নাকি লুটপাট হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত তিন বছরে ২৭.৫ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও হাসিনার টনক নড়েনি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে হাসিনা সরকার ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত না হলেও বছরের শেষে শ্রীলংকার মত আরেকটি ‘ইকনমিক মেল্টডাউন’ এড়াতে পারতো না।
৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর গত ছয় মাস ধরে প্রাণপণ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে ‘মেল্টডাউন’ থেকে বাঁচানোর জন্য। এস আলম কর্তৃক লুটে নেয়া সাতটি ব্যাংকসহ এগারটি ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড পরিবর্তন করা হয়েছে এসব ব্যাংককে দেউলিয়া হওয়া থেকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েকটি ব্যাংককে তারল্য সরবরাহ করা হয়েছে ওগুলোকে আবার ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য। প্রথমে টাকা ছাপিয়ে তারল্য সরবরাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও শেষ পর্যন্ত ঐ ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া হওয়ার আশংকা থেকে বাঁচানোর জন্য নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ২২,৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে তারল্য সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার–বিক্রয় বন্ধ করা হয়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য। এক ব্যাংকের উদ্বৃত্ত বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে অন্যান্য ব্যাংকের এল/সি এর খরচ মেটানো হয়েছে। প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের বকেয়ার মধ্যে ১.৮ বিলিয়ন ডলার শোধ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ডলার ক্রয়ের মাধ্যমে। আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক, জাইকা ও এডিবি থেকে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার ঋণ চাওয়া হয়েছে রিজার্ভকে কিছুটা চাঙা করার জন্য। ডিসেম্বর মাস থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্দেশ্যে অনেকগুলো পণ্য আমদানিতে শুল্কহ্রাস করা হয়েছে। একইসাথে, ডলারের দামকে টাকার অংকে এক’শ বাইশ/তেইশ টাকায় স্থিতিশীল রাখার প্রয়াস জোরদার করা হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের অস্থিরতা নিরসনের উদ্দেশ্যে। আমদানি বাণিজ্যের ওভারইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিং কঠোর ও জোরদার করা হয়েছে।
অবশ্য, খুশির খবর হলো যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর পাঁচ মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ফর্মাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর ফলে ডলারের সরবরাহ অনেকখানি বেড়ে যাওয়ায় কার্ব মার্কেটে ডলারের দামের পার্থক্য সরকার–নির্ধারিত বাজারের দামের ১ শতাংশের মধ্যে এসে গেছে এবং স্থিতিশীল রয়েছে। উপরের তথ্য–উপাত্ত থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে দেশের ফাইনেন্সিয়াল খাতের মারাত্মক সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে। উপরের বর্ণনা থেকে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতি–প্রকৃতি সম্পর্কে সুষ্পষ্ট দিক্–নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত ভাল একটি ‘ইকনমিক ম্যানেজমেন্ট টিম’ গঠন করেছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
অন্যদিকে,কয়েকজন উপদেষ্টার কার্যক্রমে মন্থরতার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বিশেষত, জনগণের মধ্যে প্রবল ধারণা গেড়ে বসেছে যে দেশের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অদক্ষতার কারণে। ঐ পদ থেকে ছাত্রদের চাপে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াতকে সরিয়ে দেওয়া সমীচীন হয়নি বলে জনমত রয়েছে। সরকার একজন সাবেক আইজিপি জনাব খোদা বখশের সহায়তা নিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ বাহিনীতে বিদ্যমান অকার্যকারিতা মোকাবেলার জন্য। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিরুদ্ধেও অদক্ষতার অভিযোগ উঠছে প্রায়শ। এতদ্সত্ত্বেও মোটামুটিভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতিতে স্থিতিশিীলতা বজায় রেখেছে।
লেখক : সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়