পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র কাটছে পাহাড়

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালো পরিবেশ অধিদপ্তর

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি | বৃহস্পতিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

পরিবেশ আইন অমান্য করে খাগড়াছড়িতে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটছে খোদ পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। পাহাড় কাটা বন্ধে জেলা প্রশাসকের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন ঘটনায় বিস্মিত অনেকে। এ ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে খাগড়াছড়ি পরিবেশ অধিদপ্তর।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলতাফ হোসেন দাবি করেন, পাহাড় কাটা হচ্ছে না বরং বর্ষায় ভেঙে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে তা দিয়ে ইনস্টিটিউটের একটি নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ইনস্টিটিউটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে চলাচলের জন্য একটি মাটির রাস্তা রয়েছে। রাস্তা থেকে মাটি সরানোর পাশাপাশি খাড়া করে পাহাড়ের বড় একটি অংশও কেটে ফেলা হয়েছে। পাহাড় থেকে মাটি কাটার কাজে ব্যবহার হয়েছে পেলোডার। কাটা মাটি ট্রলিতে করে নিয়ে গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে। এভাবে কফি বাগান লাগোয়া পাহাড়ের একটি অংশের অনেকটা সাবাড় হয়ে গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে জমি ভরাট করা হচ্ছে। সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের বেপোরোয়া পাহাড় কাটার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পরিবেশ সংগঠক ও পিটাছড়া বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ রাসেল। তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কীভাবে পাহাড় কাটে? সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি এরকম উদাহরণ তৈরি করে তাহলে অন্যরা কি করবে? বর্তমান সময়ে পরিবেশ উপদেষ্টা, আমরা সবাই মিলে পাহাড় কাটা বন্ধে তৎপর রয়েছি। এরই মধ্যে কোনো অজুহাতেই পাহাড় কাটার সুযোগ নেই। যারা পাহাড় কাটার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

এদিকে পাহাড় কাটার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খাগড়াছড়ি পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসান আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাহাড়ের মাটি কাটার প্রমাণ পেয়েছি। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেব।

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) মো. হাসান মারুফ বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি জানার পরই আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্তের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ৩ ফেব্রুয়ারি জেলায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার সভায় পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের উপর জোর দেয়া হয়েছে। পাহাড় কাটায় জড়িতদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাতির বিরুদ্ধে থানায় শতাধিক জিডি
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনার গাড়িচালকের ছেলে রুবেল গ্রেপ্তার