দেশ হতে দেশান্তরে

কম্বল কাহিনি

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ

এই সেলিম, তুমি তো দেখছি আমার প্রতিবেশী হতে যাচ্ছো। বাহ, বেশ ভালোই হল। একটু আগে গিউসি তোমার বাড়ির কন্ট্রাক্ট পাঠিয়েছে একাউন্টসে। আমি সেটা সই করতে গিয়ে দেখলাম, আমি যে গ্রানাডা কমপাউন্ডে আছি সেখানেই থাকবে তুমিও। আচ্ছা, ভালো কথা গিউসি মাত্র তিন মাসের জন্য কন্ট্রাক্ট করলো কেন? এছাড়া এ মাস তুমি তো হোটেলেই আছো, তাও এই মাসের ভাড়াই বা দিচ্ছে কেন? তা কি জানো?’

ফিলের অফিস থেকে বেরিয়ে আমার অফিস পেরিয়ে নিজ হুজরার দিকে যেতে যেতে, দরজায় দাঁড়িয়ে টেবিলে ঘাড় গুঁজে কাজে ব্যস্ত আমার উদ্দেশ্যে আমিন ইব্রাহিম এ কথাগুলো বলতেই, বললাম হেসে

হ্যাঁ, আর একদিন পরই তোমার রাজ্যে আস্তানা গাড়ছি। তবে কথা হচ্ছে বাকি যে অত্যন্ত যৌক্তিক প্রশ্নগুলো করেছ এই মাত্র তুমি, তা শুনে মনে হচ্ছে, ঐগুলো আমারও প্রশ্ন। যার মানে হচ্ছে ওসবের উত্তর গিউসির জানা থাকলেও আমার জানা নেই। তা, এসে বসো না এখানে। চা খেতে খেতে তোমার কাছ থেকে ঐ গ্রানাডা কমপাউন্ডের ব্যাপারে সবক নেই। শোন, সেদিন আমিও গিয়েছিলাম গিউসির সাথে ঐ কমপাউন্ডের ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে, আর তখনই শুনেছিলাম তুমিও থাকো ঐখানে। কিন্তু তুমি তো সেদিন আমাদের জেদ্দা নাকি দাম্মাম অফিসে গিয়েছিলে, তাই আর তোমার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে পারিনি।

না না এখন আর চা খাবো না। ফিলের ওখানে চা’য়ের সাথে প্রচুর ধোঁয়াও খেয়েছি, মানে প্যাসিভ স্মোকিং, বুঝলে না? ওহ হো, কাকে কী বলছি! তুমি তো আবার এ ব্যাপারে বসের যোগ্য সাগরেদ! হা হা হা। নাহ বেশ কিছু কাজ আছে হাতে, যাই বরং এখন রুমে। লাঞ্চে কথা হবে এ ব্যাপারে।’ বলেই পেশাগত কারণে আমি যে সব পাকিস্তানিদের চিনি এবং এ পর্যন্ত যে ক’জন সিএফওর সাথে কাজ করেছি, এই দুই দিক থেকেই একদমই ব্যতিক্রম, আমিন ইব্রাহিম রওয়ানা করলো নিজের হুজরার দিকে।

ব্যাপার হচ্ছে এইবার বিয়াদে আসার পর দ্বিতীয় যে ব্যাপারটিতে বিস্মিত হয়েছিলাম বলে বলেছিলাম আগে, তা হল এই আমিন ইব্রাহিমকেই ঘিরে। প্রথমবার আসার পর পরিচিত হয়েছিলাম সৌদি অফিসের যে মৃদু ও স্বল্পভাষী সিএফও, জার্মান স্টেফান জেলারের সাথে; একমাস পরে এসে দেখি হয়ে গেছে সে কর্পূরের মতো উধাও। আর তার জায়গায় নাজিল হয়েছে এখানে কি না দ্বিতীয় আরেক সি এফ ও, যে নাকি হল জন্মসুত্রে পাকিস্তানি! নাম তার আমিন ইব্রাহিম! অথচ গতবার ঘুনাক্ষরেও এই ব্যাপারটি শুনিনি। তাহলে ফিলের ভাষায় এই বিজা আ (ইরুধৎৎব) কান্ট্রি সৌদিতে, কোন আচানক ঘটনা ঘটাতেই স্টেফান জেলারকে এরকম আচানক ভাবেই চলে যেতে হয়েছিল নাকি? না হয়, গতবার তো দুই দুইদিন লাঞ্চ করেছি ফিলের সৌজন্যে তিনজনে, মানে ব্রিটিশ আম্রিকান ফিল, জার্মান স্টেফান ও এই অধম বাঙাল একসাথে। ব্যাপার হচ্ছে যতোই চিন্তাভাবনা করে, শব্দ গুনে গুনে, মেপে মেপে নিম্নস্বরে কথা বলার অভ্যাস থাকুক না কেন স্টেফানের, সে যে অচিরেই চলে যাচ্ছে, অন্তত এ কথাটি তো সে আমাকে বলতেই পারতো, বিশদ না হলেও সংক্ষেপে। না কি জার্মানরা সদ্য ও স্বল্প পরিচিত লোকজনের সাথে, ‘তোমার সাথে আর দেখা হবে না’, বা ‘এই দেখাই শেষ দেখা নয় তো’ জাতীয় কোন প্যানপ্যানানির ধার ধারে না? এ জন্যই কি সযত্নে ঐ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছিল স্টেফান?

আমিনের সাথে পরিচিত হবার পর থেকেই এসব কথা মনে সারাক্ষণই বারবার খোঁচাখুঁচি করতে থাকায় অতপর ব্যাপারটির এস্পার ওস্পার করার জন্য জিজ্ঞেস করেছিলাম তা ফিল কে? উত্তরে ফিল তার স্বভাবসুলভ উচ্চ গমগমে হাসির সাথে নাক মুখ দিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলেছিল, ‘দ্যাটস এন ইন্টারেস্টিং স্টোরি। সিউর ইউ উইল নো ইট সুনার অর লেটার! হা হা হা’

ফিলের উত্তর শুনে বুঝেছিলাম ঝেড়ে কাশতে চাচ্ছে না সে, সেই মুহূর্তে। ফলে আমি নিজেও নিজ পেশাদারিত্বের পরাকাষ্ঠা হিসেবে এ ব্যাপার নিয়ে আর চাপাচাপি করিনি। তবে মনে মনে প্রমাদ গুনে ভাবছিলাম অবস্থা তো আমার দেখি হয়েছে তেমন, যাকে বলে

আমি কম্বল ছাড়লে কী ? কম্বল তো ছাড়ে না আমারে।’

হ্যাঁ, ১৯৭১ এ তথাকথিত, না বলা উচিৎ স্বঘোষিত শ্রেষ্ঠ সেনাবাহিনী বলে বড়াই করা পাকি হানাদার ন’ মাস ধরে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিয়ে, আমাদের সোনার বাংলা পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেবার পর অবশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের বিখ্যাত গাবুইরা মাইরের কাছে পরাভব মেনে হাঁটু গেড়ে মাপ চেয়ে ভেগে গেলেও, তাদের সেই জান্তব নৃশংসতার কথা কখনো ভুলতে পারি না আমি। সে কারণে পেশাগতভাবে যখনই কোন পাকিস্তানির সাথে পরিচিত হই, আপ্রাণ চেষ্টা করি তার সাথে যতো কম কথা বলা যায়, তা। পারলে একদম এড়িয়ে যেতে চাই তাদের, কারণ ঐ যে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন না, ‘পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও।’

পাকিস্তানিদের ব্যাপারে হুমায়ুন আজাদের এই কথার সাথে পুরোপুরি একমত, একাট্টা, একাত্মা যেহেতু আমি, তাই এই দ্বিতীয়বার রিয়াদে আসার পর এখানকার দ্বিতীয় বিস্ময় আমিন ইব্রাহিমের মুখোমুখি হয়েছিলাম যখন, তাতে বড়ই পীড়িত বোধ করেছিলাম।

কারণ সে সময় আরও মনে পড়ছিল যে, ১৯৭১ এ যখন আমাদের দেশে পাকিস্তানী হানাদারদের জান্তব নৃশংসতায় সংঘটিত হচ্ছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণহত্যাটি, তাতে এই সৌদিই জানিয়েছিল দুই হাত তুলে নিরুংকুশ সমর্থন! সে কারণে যখন এই সৌদির মার্কেটিং হেডের দায়িত্ব নেবার প্রস্তাবটি দিয়েছিল হেড কোয়ার্টার থেকে এরিক, তাতে শুরুতে পাচ্ছিলাম না সায় মন থেকে কিছুতে। আবার সমস্যা হচ্ছে, তখন তো তাকে আবার মুখের উপর নাও করতে পারছিলাম না, স্রেফ পেশাগত কারণেই।

তবে ঘটনা হচ্ছে সে সময়ের আমার ঐ ত্রিশংকু অবস্থাতেই আবার ঐ পাকিস্তান বিষয়কই একটা ব্যাপার কানে এসেছিল হাওয়ায় ভেসে, যাতে মনে হয়েছিল নাহ, তাহলে সৌদিতে যাওয়াই ভালো! হ্যাঁ সৌদিতে কাজ করতে আসার ব্যাপারে কিঞ্চিৎ হলেও যে ধনাত্মক প্রণোদনা এসেছিল মনে তখন, ঘটেছিল তাও সেই পাকিস্তানকে ঘিরেই। নাহ বুঝতে পারছি একটু ঝেড়েই কাশতে হবে ব্যাপারটা নিয়ে। অতএব বলছি তা; যদিও এক্কবারে সবিস্তারে না, বলছি তা সংক্ষেপেই।

বিশ্বের নানান বিশ্বখ্যাত গ্লোবাল কোম্পানি, যেগুলো আমাদের দেশে মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানি নামে পরিচিত, নানান কারণে তারা কয়েক বছর পর পরই তাদের বৈশ্বিক ব্যবসা, লাভজনকভাবে ও কৌশলগতভাবে সুচারুভাবে পরিচালনা করার জন্য, বিশ্বের দেশগুলোকে, ওগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা ও ভৌগোলিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে একেক সময় একেক রকম গ্রুপাবদ্ধ করে, ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।

তো সে মতোই সেই ২০০০ সাল থেকে নোভার্টিস মানে আমার কোম্পানি এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল নামে যে ম্যাপ এঁকেছিল নিজেদের কৌশলগত ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য, সেই ম্যাপের মধ্যে ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, কোরিয়া, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশ একসাথে ছিল, যাদের সকলের হেড কোয়ার্টার ছিল সিঙ্গাপুর। কিন্তু বছর কয়েক পর মানে ২০০৪/০৫ সালের দিকে, ভৌগোলিক অবস্থানগত সেই কৌশলের সাথে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনাকে গুরুত্ব ব্যাপারটি মুখ্য হয়ে উথলে, চীন ও ভারতকে তারা সেই এশিয়াপ্যাসিফিক অঞ্চল থেকে বের করে ফেলে। ফলে বাংলাদেশ সহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বাকি ১০টি দেশ থেকে যায় পূর্বতন এশিয়াপ্যাসিফিক অঞ্চলেই, যাদের রিপোর্টিং অফিস থেকে যায় সিঙ্গাপুরে। এবং চলছিল তা ভালোই।

কিন্তু ২০০৮ সালে কোম্পানির সুইজারল্যান্ড হেডকোয়ার্টারের এক বড় বস হঠাৎ করেই, সিংগাপুরের ঐ রিজিওনাল অফিসটির কোনই প্রয়োজন নাই বলে সেটিকে রাতারাতি বন্ধ করে দিয়েছিল, খরচ কমানোর ছুতায়, যে সময় আমি নিজে ছিলাম সিংগাপুরে এসাইনমেন্টে। অবশ্য তার কিছুকাল আগে থেকেই প্রায়শই নানান ফিসফাস থেকে সিংগাপুরের রিজিওনাল হেড যিনি ছিলেন সুইস, তার সাথে হেডকোয়ার্টারের তারই সেই বস, যিনি ছিলেন একজন স্প্যানিশ; তাদের দুজনের মধ্যে বিরাজমান একটা কি রকম যেন বিরোধ, দ্বন্দ্ব বা ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কথা শোনা যাচ্ছিল, যদিও তা নিয়ে কেউ গা করছিল না। ওহ নাহ, থাকুক সে কথা আপাতত। বলা যাবে তা অন্য সময়।

ঘটনা হচ্ছে সুযোগ পেয়ে নিজ ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করতে গিয়ে, এইভাবে হঠাৎ করে সিংগাপুরের রিজিওনাল অফিসটি রাতারাতি উধাও করে দেবার পর, সেই স্প্যানিশ বসের ঘাড়ে যখন নতুন করে ১১টি দেশের দায়িত্ব চেপে বসেছিল, তাতে তা সামলাতে সে হিমশিম খাচ্ছিল যখন, তখন কোনো এক কন্সলাটেন্ট কোম্পানি নাকি তাকে একটা টোটকা নিদান বাতলেছিল। সে নিদান মোতাবেক ভূতপূর্ব এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সেই দেশগুলোর দুই তিনটা নিয়ে একটা করে গুচ্ছ বানিয়ে, সেই গুচ্ছের প্রতিটির মধ্যে ব্যবসার আকারে সবচেয়ে বড় যে দেশ, সেটিকে লিড কান্ট্রি ঘোষণা দিয়ে, লিড কান্ট্রির হেডকে ঐ দুই বা তিন দেশের বস বানিয়ে দেবার কথা চলছিল। তো সেই টোটকা ধারার জের হিসাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান, এই দুই দেশকে এক গুচ্ছে রেখে পাকিস্তানকে লিড কান্ট্রি ঘোষণা করা হবে বলে শুনছিলাম তখন, তাতে পিত্তি জ্বলে যাচ্ছিল আমার যখন, ঠিক সেসময়ই এরিক আমাকে এই সৌদি প্রস্তাব দিয়েছিল। ফলে শুধু এই কারণে কিছুটা হাঁফ ছেড়ে ভেবেছিলাম যে, আর যাই হোক সৌদিতে যদি যাই, তবেতো পাকিস্তানের ফোঁপর মাতব্বরির মুখোমুখি হতে হবে না আর সর্বক্ষণ। অতএব এ তো হল আমার জন্য শাপে বর।

কিন্তু তারপর সৌদির মার্কেটিং হেড হিসাবে যোগ দিতে না দিতেই যখন বুঝতে পারলাম কপালের ফেরে শেষ পর্যন্ত আমাকে কি না ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে সেইই পাকিস্তানি এই আমিন ইব্রাহিমের সাথে, তাতেই মনে পড়েছিল আমার সেই বিখ্যাত কম্বল কাহিনির কথা।

অবশ্য সেদিন সাথে সাথেই দেখেছিলাম আশার আলোও। কারণ প্রথম পরিচয়ে, যে ফার্স্ট ইমেপ্রশন হওয়ার একটা ব্যাপার আছে, আমিন ইব্রহিম অত্যন্ত ভালোভাবে উৎরে গিয়েছিলেন প্রথম পরিচয়ের সেমুহূর্তেই। ব্যাপার হচ্ছে তার আগ পর্যন্ত আমার অভিজ্ঞতার গড়পড়তা পাকিস্তানিদের মতো, আমিন কিন্তু সেদিন আমি বাংলাদেশী শুনেই, হামকো তুমকো বলে উর্দুতে কথা বলেনি শুরুতেও তো নাই, বলেনি এখন পর্যন্তও। দুজনেই বাতচিত করেছিলাম সেদিন যেমন, করি আজো আমরা ইংরেজিতেই। তদুপরি একদিন সে কথায় কথায় বলেছিল,

শোন আমি বাংলা বলতে পারি না, তবে বাংলা কিন্তু বুজি আমি। কেন বুঝি? তা তোমাকে বলবো একদিন সময়মতো।’

জানি না এ ব্যাপারটি আমিন কি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছে? নাকি সে পাকিস্তানি হলেও বহু বছর যাবৎ যেহেতু সে ও তার পারিবার কানাডার নাগরিক হিসাবে কানাডায় বসবাস করেছে, সে কারণেই কি তার এই গুণগত পরিবর্তন হয়েছে কী না জানি না। ঘটনা যাই হোক, কানাডিয় পাকিস্তানি আমিনকে আমার পছন্দই হয়েছিল বরং তাতে। এছাড়া সে সেহেতু সৌদিতে আসার আগে তিন বছর কাজ করেছে আমাদেরই কোম্পানির মিশরের সি এফ ও হিসেবে। তার সেই মিশরি অভিজ্ঞতা আমার কাজে লাগবে বলে ভেবেছিলাম মনে মনে। অন্যদিকে আমিনও এ কথাটি একদিন বলেছিল সরাসরি মুখ ফুটে যে, আমার সাহায্য দরকার তার। কারণ একদিকে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং রিসোর্স থাকবে আমার হাতে, অন্যদিকে টিমে আছে আমার মিশরিয়দের সংখ্যাধিক্য।

অর্থাৎ দুজনের কাছেই, একজন আরকেজনকে সহায়তা করার ব্যাপারটি হয়ে গিয়েছিল ইংরেজিতে যাকে বলে ‘উইন উইন সিচুয়েশন’, তা। ফলাফল দ্রুতই হয়ে উঠেছিলাম আমরা লাঞ্চ পার্টনার। দিনের অন্য কোনো সময়ে একজনের সাথে আরেকজনের দেখা না হলেও, লাঞ্চ যে দুজনে করি আমরা একসাথে, এটা মোটামুটি সকলেই জানে। আর এখনতো যেহেতু আমারও বাসা ঠিক হয়েছে ঐ একই কমপাউন্ডে অতএব সৌদির আগামী দিনগুলোতে কাটবে আরও বহু প্রহর যে একসাথেই আমাদের,বুঝতেই পারছি তা। আর এ ব্যাপারে আমিনকেও বেশ আমোদিতই মনে হচ্ছে। অতএব না যাই এখন, গিউসিকে জিজ্ঞেস করে আসি আমিনের তোলা সেই প্রশ্নগুলো, ভাবতে ভাবতে আড়মোড়া ভেঙে উঠলাম চেয়ার ছেড়ে।

লেখক: কলামিস্ট, ভ্রমণ সাহিত্যিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাত্রাতিরিক্ত খেলনা সৃজনশীলতার অন্তরায়
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের পুরনো গ্রন্থরাজ্যের উত্থান পতনের ইতিকথা