প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগ ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (ভ্যাকসিন বিভাগ)-এর যৌথ উদ্যোগে জরায়ু–মুখ ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জাহেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুর ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, বাংলাদেশে জরায়ু–মুখ ক্যান্সারের রোগী দিন দিন বাড়ছে। প্রতি বছর এই রোগে প্রচুর নারী মারা যাচ্ছে, আবার অনেক নারী নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। জরায়ু–মুখ ক্যান্সারের ভয়াবহতা থেকে বাংলাদেশের নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এইচপিভি টিকা। ৯–১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের দুই ডোজ ও ১৫–৪৫ বছর বয়সী নারীদের তিন ডোজ গ্রহণ করতে হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেনশনের যৌথ উদ্যোগে চসিকের স্কুলগুলোর ৯–১৪ বছর বয়সী ছাত্রীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে ক্যাম্পেইন করেছি। আমি কাপাসগোলা স্কুল ও অন্যান্য আরও কয়েকটি স্কুলে গিয়েছি। আমি তাদের শতভাগ নিশ্চিত করেছি টিকাটি পাওয়ার জন্য। ইনসেপ্টা প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ছাত্রী, শিক্ষিকা ও নারী কর্মকর্তা–কর্মচারী, এমনকি ইউনিভার্সিটির শিক্ষক–শিক্ষিকা–কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পরিবারের নারী সদস্যদেরও কম মূল্যে এইচপিভি টিকা দিচ্ছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এজন্য ইনসেপ্টাকে ধন্যবাদ।
মেয়র আরও বলেন, এরকম প্রোগ্রাম শুধুমাত্র এখানে আবদ্ধ না রেখে পুরো চট্টগ্রামে ছড়িয়ে দিতে হবে। আপনারা যে সাশ্রয়ী মূল্যে টিকা দিচ্ছেন এটাও জনগণকে জানাতে হবে। আমরা যতক্ষণ না জানাতে পারব, ততক্ষণ তারা এটা নেবে না। এখানে অনেক সময় অনেক ভীতি কাজ করে যে, এটা নিলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে কিনা, কোনো সমস্যা হবে কিনা। তাদেরকে বোঝাতে হবে, এই টিকা জীবন রক্ষার জন্য, এতে কোনো অসুবিধা নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির বলেন, ৯–৪৫ বছরের নারীরা জরায়ু–মুখ ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছে। এটা নীরব ঘাতক ব্যাধি। এইচপিভি টিকার মাধ্যমে এই রোগ আমাদের দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডা. মুক্তা খানমের সঞ্চালনায় সেমিনারটি পরিচালনা করেন বিশেষ অতিথি মোহাম্মদ আমিনুর ইসলাম। সেমিনারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশে নারীদেরকে জরায়ু–মুখ ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন করা, স্ক্রিনিং–এর আওতায় নিয়ে আসা এবং ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে রোগের প্রতিরোধ করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগ প্রতিরোধের জন্য বদ্ধ পরিকর। এই সংস্থা বৈশ্বিক কৌশল ৯০–৭০–৯০ অবলম্বনে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে জরায়ু–মুখ ক্যান্সার সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে চায়।
এরকম একটি যুগোপযোগী, গুরুত্বপূর্ণ, লাইফ–সেভিং সচেতনতামূলক প্রোগ্রামে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি বলেন, প্রতিরোধ প্রতিকারের চেয়ে উত্তম। রেগুলার চেকআপ, ডাক্তারের প্রয়োজনীয় উপদেশ মেনে চলা এবং এইচপিভি টিকা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের নারীসমাজকে রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে পারি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ইনসেপ্টার চট্টগ্রাম সেলস অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেলস ম্যানেজার সুরঞ্জিত বৈদ্য। উপস্থিত ছিলেন স্থপতি প্রফেসর সোহেল এম শাকুর, প্রফেসর এম. মঈনুল হক, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তানজিনা আলম চৌধুরী, লাইব্রেরিয়ান মো. কাউছার আলম ও ইনসেপ্টার এরিয়া ম্যানেজার মোশাররাফ হোসেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।