সমাজে মন্দলোকেরাই সংঘবদ্ধ

ড. সাদিকা সুলতানা | বুধবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

আড়াই বছরের ফুটফুটে মেয়ে তিতলী। নানু বাড়ির গ্রামের উঠোনে নেংটো দৌড়াচ্ছে, খেলছে। তিতলী অন্য বাচ্চাদের তুলনায় দুষ্টু চঞ্চল। মুরগী মা সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চা নিয়ে ঘুরছে। তিতলী একটা মুরগীর বাচ্চা ধরে ফেললো হাতে নিতেই পেছনে এসে মুরগী মা ওকে আক্রমণ করলো। বাচ্চাটা যতক্ষণ না হাত থেকে মুরগী বাচ্চাটিকে ছাড়লো ততক্ষণ ঠোকর বসালো মা মুরগী। যেহেতু ওর গায়ে পোশাক ছিলনা নরম চামড়ায় শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত বের হতে লাগলো। উঠোনের চারিধারে অনেকেই ছিল বয়স্ক মানুষজন কেউ এগিয়ে এলো না। ওর মাকে ডাক দিল এই বলে, তোমার মেয়ে এত দুষ্টু কেন? খুব ভালো হয়েছে এভাবে কামড় দিয়েছে। আচ্ছা শাস্তি হয়েছে! রাতে তিতলীর জ্বর এলো বমি করলো বাচ্চাটা। শীতের রাতে তিতলীর মা কাঁদতে কাঁদতে বমি পরিষ্কার করার জন্য ওকে বালতির ঠাণ্ডা পানিতে ধরে রাখলো আর চিৎকার করতে লাগলো আর দুষ্টুমি করবি, আর কিছু ধরবি! তোর জন্য আমাকে মানুষের কথা শুনতে হয়! সমাজের অন্য মানুষের কথার আক্রমণ থেকে ব্যক্তি নিজেকে বাঁচাতে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলে। আমার একটা সময় ধারণা ছিলো দশজন যেটিকে মন্দ বলছে বা যে লোকটিকে খারাপ বলছে সে খারাপ এখন বাস্তবে প্রতিদিন যে পরিবেশের মুখোমুখি হই তাতে দেখি একজনের ভালো ভাবনা সততা, নিষ্ঠাকে দশজন মিলে মন্দ বলে প্রতিষ্ঠা করছে। মন্দলোকেরা বেশ সংঘবদ্ধ নিজেদের মধ্যে তাদের দর্শন এক, কাজের রীতিইও এক। আর যে ব্যক্তি ঠিক কে ঠিক বলছে, ভুলকে ভুল বলছে সে একা হয়ে যায়। মিথ্যার জয় জয়কার! সত্য নীরব হয়ে যায় কথার আক্রমণ থেকে বাঁচতে এমনিভাবে চুপ হয়ে যায় যেন তার অস্তিত্বই নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগৌতম বুদ্ধের ভিক্ষাপাত্র কান্দাহারে
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে