হাটহাজারীতে প্রবাসে নিহত স্বামীর মুখ দেখার পর দুইদিনের মাথায় স্ত্রী সৈয়দা মিনু আকতার (৩৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নিহতের আপন ছোট ভাই সৈয়দ মো. নঈম উদ্দিন নিহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল রবিবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাইয়ে স্ট্রোক করে মিনু আকতারের স্বামী প্রবাসী মো. মানিকের (৪৬) মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই নঈম জানান, হাটহাজারী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মধ্যম দেওয়াননগর এলাকার আবু কালাম সওদাগর বাড়ির বাসিন্দা মানিকের সাথে গত ২০ বছর পূর্বে চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের হযরত মোস্তাফিজুর রহমান বাড়ির মৃত সৈয়দ ছিদ্দিক আহমদের বড় মেয়ে আমার বোন মিনু আকতারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
তাদের সংসারে মো.মনির (১৭) ও মোছা. তানহা (১৪) নামে দুইটি সন্তান রয়েছে। মানিক ভাই প্রবাসে ছিলেন। আমার বোনের একটু মানষিক সমস্যাও ছিলো। তাদের সংসার ভালই চলছিলো। গত ৭/৮ মাস পূর্বে তিনি দেশ থেকে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় দুবাই নিজের কর্মস্থলে ফিরে যান।
এর মধ্যে গত রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুবাই সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটরি দিকে আজমান শহরস্থ নিজ বাসায় স্ট্রোকজনিত কারনে আমার বড় বোনের স্বামী মানিকের মৃত্যু হলে চারদিন পর তার মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়িতে এনে ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে মানিক ভাইকে দাফনের ঠিক দুই দিনের মাথায় ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৮ টার দিকে আমার বোনটাও না ফেরার দেশে চলে গেলো। এভাবে তাদের মৃত্যুর কারনে একেবারে এতিম হয়ে গেলো তাদের দুটি সন্তান।
তাদের সান্তনা দেয়ার কোনো ভাষাই আমাদের জানা নাই। আমার বোন তার স্বামীর এভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না।মানিক ভাইয়ের লাশ বাড়িতে আনার পর নিথর দেহটি দেখেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আমার বোন। সেদিন থেকেই আহার ছেড়ে দেয় বোন আমার। পরে দুইদিনের মাথায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পর আমার বোনের মৃত্যু হয়।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহতের ছোট ভাই নঈম আরও বলেন, কি বলে বোনের অবুজ দুই সন্তানকে সান্তনা দিবো কিছুই মাথায় আসছেনা। তাদের চেহারার দিকে তাকাতে পারিনা, কিভাবে তাদের দিন কাটবে এই চিন্তায় আমাদের পরিবারের কারোরই রাতে চোখে ঘুম আসে না।
নিহত মানিকের ভাইপো মনসুর জানান, রবিবার সকালের দিকে জানাযা নামাজ শেষে চাচার কবরের পাশেই মরহুমা চাচি মা’কে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে প্রবাসী স্বামী মানিকের মৃত্যুর কয়েকদিনের ব্যবধানে এভাবে স্ত্রীর মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।