গত মাসে ঘোষিত রাউজান উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা। ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে তারা এ কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ বলে দাবি করেন। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেও একই দাবি জানানো হয়।
সংবাদসম্মেলনে লিকিত বক্তব্য পাঠ করেন রাউজান পৌরসভা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ মনজুরুল আলম। সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনে অংশ নেয়ারা বিএনপি’র ভাইস–চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারি বলে পরিচিত।
উল্লেখ্য, সম্মেলন ছাড়াই গত মাসে রাউজান উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। ১৪ জানুয়ারি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের নির্বাচিত দেখানো হলেও তা প্রকাশ করা হয় ২০ জানুয়ারি। নির্বাচিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইজনই বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারি বলে পরিচিত। গত ১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা বিএনপি’র একটি পক্ষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে রাউজানে হামলা করছে বলে দাবি করেন। এদিকে গতকাল অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ১ ফেব্রয়ারির সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি’র বিপক্ষে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করে গিয়াস কাদের চৌধুরীর জনপ্রিয়তা ম্লান করার অপকৌশল করা হযেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিগত ১৭ বছর বিনা ভোটের এমপি ফজলে করিমের অনুগত বাহিনীর হাতে জিম্মি ছিল রাউজানবাসী। ফজলে করিমের প্রত্যক্ষ নির্দেশে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী হামলা মামলায় জর্জরিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিল এবং শতাধিক নেতাকর্মী গুমের স্বীকার হয়। এসব ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে উপজেলা ও পৌরসভার দুই সদস্য বিশিষ্ট নাম উল্লেখ করে পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইয়াছিনের জন্য গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুগত কমিটি সংবাদ সম্মেলনে করে মায়াকান্না তাদের আওয়ামী প্রীতি ও পূর্ণবাসনের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাউজানের প্রতিটি ইট ভাটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পূর্বে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি ছিলো। ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও গত কয়েকদিন ধরে আবারও চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে; এটা কার নির্দেশে হচ্ছে রাউজানবাসী তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাউজানের ইতিহাসে সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম হৃদয় বিদারক ঘটনা ছিল নোয়াপাড়ার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ড। যার ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারী সনাক্ত হওয়া সত্ত্বেও কোনো আসামী না করা রহস্যজনক। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি সদস্য আবু জাফর চৌধুরী, নুরুল হুদা চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফিরোজ আহাম্মদ, উত্তর জেলা বিএনপি সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবউল্লাহ মাস্টার, দিদার চেয়ারম্যান, এরশাদ চৌধুরী, কামাল উদ্দিন, সাবের সুলতান কাজল, মোজাম্মেল হক, ইউছুপ তালুকদার, সরওয়ার আলম, মহিউদ্দিন জীবন, মাসুদ, সৈয়দ তৌহিদুল আলম, মো: তসলিম উদ্দিন, মো. ছোটন, জাহেদুল ইসলাম, ফরিদ উদ্দিন, সেকান্দর মিয়া হিরু, কাজী বাদশা, মো: এনাম।