আনোয়ারায় ১১ ইউনিয়নে ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। কৃষি জমির পাশাপাশি রেহাই পাচ্ছে না সরকারি খাস জমিও। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ২০টিরও বেশি মাটি কাটা সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে মাটি কেটে প্রকাশ্যে বিক্রি করে চললেও প্রশাসন অনেকটা নিরব। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ মাটি কাটা চলছে। এতে জনমনে প্রচন্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের পারকি, মাঝের চর, দুধ কুমড়া, গোবাদিয়া, বারশত, বোয়ালিয়াসহ বিভিন্ন বিল ও সরকারি খাস জমি, রায়পুর ইউনিয়নে পরুয়া পাড়া, রাহাত্তার বিল, চুন্নাপাড়া, গহিরা, রায়পুর, সরেঙ্গাসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে চলছে মাটি কাটা। জুঁইদন্ডি ইউনিয়নের দক্ষিণ জুঁইদন্ডি, পূর্ব জুঁইদন্ডি, খুরুশকুলসহ বিভিন্ন গ্রাম, বটতলী ইউনিয়নের আইর মঙ্গল, বরৈয়া, তুলাতলী, বৈরাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম, চাতরি ইউনিয়ন, আনোয়ারা, বারখাইন, বরুমচড়া, হাইলধর, পরৈকোড়া ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে রাতের আধারে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। সন্ধ্যা হলেই উপজেলার বিভিন্ন বিলে নামে মাটি কাটার এস্কেভেটর আর ট্রাক। এস্কেভেটর দিয়ে কাটার পর ট্রাকে সেই সব মাটি চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
স্থানীয় চাতরি ইউনিয়নের বাসিন্দা আশরাফ উদ্দীন চৌধুরী কুসুম জানান, উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে ২০টিরও বেশি মাটি কাটা সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে সক্রিয় রয়েছে। এতে জনমনে ক্ষোভ থাকলেও প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানানোর সাহস পাচ্ছে না। তিনি জানান, কৃষি জমির টপ সয়েল অবাধে বিক্রি করার কারণে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভারী ট্রাক চলাচলের কারণে এলাকার গ্রামীণ সড়কও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আগামী বর্ষাতে এলাকার মানুষকে যথেষ্ট ভুগতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বারশত ইউনিয়নের জনৈক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, মাটি কাটার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করে জানালে এ ব্যাপারে জনগণকে প্রতিবাদ গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।
জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হোসাইন মুহাম্মদ জানান, মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে মাটি কাটার অপরাধে জরিমানাও করা হয়েছে।