মেয়াদ ফুরানোর দেড় মাস আগে নিলামে তোলা সেইসব মধুর প্রতি কেজি হিসেবে সর্বোচ্চ দাম উঠেছে মাত্র ৫৪ টাকা। ৮ হাজার ৩৪০ কেজি ওজনের এসব মধুর জন্য হালিশহর ফইল্যাতলী বাজার এলাকার এস এম এম আল মুরাদ নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দর হাঁকিয়েছেন। তবে এর আগে গত বছরের ৮ মে একই পণ্য প্রথমবারের মতো প্রকাশ্য নিলাম করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সে সময় নগরীর স্টেশন রোড এলাকার মিউনিসিপ্যাল শপিং কমপ্লেক্সের রফিক অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২৯ লাখ ১০ হাজার টাকা বিড করে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়। জামানত হিসেবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে ৬ লাখ টাকা অগ্রিম প্রদানও করে। ২০ মে রফিক অ্যান্ড ব্রাদার্সের নামে বিক্রয় আদেশ জারি করা হয়।
তবে রফিক অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রফিক সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও সেইসব মধু খালাস নেননি। খালাস না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বলা হয়েছে এগুলো প্রাকৃতিক মধু। কিন্তু মধু দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছে, এসব মধু প্রাকৃতিক না, কৃত্রিম। এছাড়া বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদনেও ‘ন্যাচারাল’ বা প্রাকৃতিক শব্দটি উল্লেখ ছিল না। সেখানে শুধু ‘রাসনা হানি’ লেখা ছিল। তাই অগ্রিম পরিশোধের ৬ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে আমরা মধু খালাস করিনি। গতকালের (আজ) নিলামে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে মোহাম্মদ রফিক বলেন, আমরা অংশ নিয়েছি। ২ লাখ ১০ হাজার টাকা বিডও করেছি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব মধুর মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা আছে ২৬ মার্চ ২০২৫ ইংরেজি। সেই হিসেবে সময় বাকি আছে ৪৮ দিন। কাস্টমসের নিলাম কমিটির সভা, নিলাম কমিটির অনুমোদন, পণ্যের বিক্রয় আদেশ জারি এবং পণ্যের ডিও জারিসহ সব আনুষ্ঠানিকতা সারতে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। এক্ষেত্রে এসব পণ্যের মেয়াদ থাকবে আর এক মাস। এখন এক মাসের মধ্যে ৮ হাজার ৩৪০ কেজি মধু বিক্রি হওয়া এবং ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত মেয়াদ থাকবে কিনা সংশয় রয়েছে।
বিডাররা বলছেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যদি নিলামের স্থায়ী আদেশ মেনে কাজ করত, তবে এই বিশাল পরিমাণ মধু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ত না। কারণ আগের প্রকাশ্য নিলামে যেহেতু সর্বোচ্চ দরদাতা যেহেতু পণ্য নেননি, কাস্টমস কর্মকর্তাদের উচিত ছিল, দ্রুত দ্বিতীয়বার নিলামে ওঠানো। প্রথমবার নিলামে তোলার প্রায় ৯ মাস পরে পুনরায় নিলামে তোলা হয়েছে। এই সমস্যাটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করেছে। এতে সরকারও প্রচুর রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া আরো শত শত পণ্য কন্টেনারে পড়ে থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে এ রকম অনেক পণ্য অতীতেও নিলামে তোলা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ৮ হাজার ৩৪০ কেজি মধুর প্রকাশ্য নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মধুর বিষয়ে এখন নিলাম কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।