এম এ আজিজ স্টেডিয়াম জেলা ক্রীড়া সংস্থারই থাকবে

সংবাদ সম্মেলনে সিজেকেএস ক্লাব কর্মকর্তারা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের একমাত্র ভরসার জায়গা এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেনা চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়ামোদী, ক্রীড়া সংগঠক থেকে শুরু করে কেউই। কারণ এম এ আজিজ স্টেডিয়াম না থাকা মানে চট্টগ্রামের খেলাধুলা একরকম বন্ধ হয়ে যাওয়া। অথচ খেলাধুলা করতেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে ক্লাব দেওয়া হয়েছে। আর সে ক্লাবের কর্মকর্তারা এবার সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন এম এ আজিজ স্টেডিয়াম জেলা ক্রীড়া সংস্থারই থাকবে। এই স্টেডিয়াম নিয়ে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবেনা। চট্টগ্রামের মানুষ এখন এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে একাট্টা। এই স্টেডিয়ামকে ঘিরেই যেন চট্টগ্রামের মানুষের যত বিনোদন। কেউ খেলে তৃপ্তি পায়, কেউ খেলা আয়োজন করে তৃপ্তি পায় আর কেউ খেলা দেখে তৃপ্তি পায়। কাজেই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম একটি নির্দিষ্ট ইভেন্টের হয়ে যাওয়া মানে চট্টগ্রামের ক্রীড়া কেন্দ্রীক সব বিনোদন বন্ধ হয়ে যাওয়া। তারা বলেন যেকোন স্টেডিয়ামকে একটি ইভেন্ট কেন্দ্রিক করে ফেলার কুফল আমরা বেশ ভালভাবেই বুঝতে পারছি। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা কোন খেলা আয়োজনের সুযোগ পায়না। আর সেটা সম্ভবও না। কারন তাদের অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শিডিউল থাকে। তাই চট্টগ্রামের মানুষ চায়না এম এ আজিজ স্টেডিয়াম কেবল ফুটবলের হোক। আর সেটা হলে চট্টগ্রামের ফুটবল সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চট্টগ্রামের ফুটবলও পা ফেলতে পারবেনা এই মাঠে। তাই বহুমাত্রিক ব্যবহারের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম যেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে থাকে সে জন্য সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সহায়তা চেয়েছেন সিজেকেএস আওতাভুক্ত ক্লাব কর্মকর্তারা।

গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের হলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিজেকেএস এর সাবেক সহ সভাপতি এডভোকেট শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন সিজেকেএস এর সাবেক সহ সভাপতি ও পিএ প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান। ফ্রেন্ডস ক্লাব প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল বশর, চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ওয়াহিদ দুলাল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের নবনিযুক্ত সভাপতি শাহজাদা আলম, বাকলিয়া একাদশ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, শতদল ক্লাব প্রতিনিধি শাহাবুদ্দিন জাহাঙ্গীর, সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খানসহ চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধিভুক্ত বিভিন্ন ক্লাবের কাউন্সিলরবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া সংগঠকরা বলেন আমাদের আনন্দ মাঠেঘাটে। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি হয় ক্লাব নাহয় সংস্থা নিয়ে বেশি সময় পার করি। আর আমাদের আনন্দের মুল কেন্দ্র এই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। কারণ এখানেই আমরা অনেক খেলাধুলার ইভেন্ট আয়োজন করে থাকি। তারা বলেন এই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম চট্টগ্রামের বিত্তবান ক্রীড়া সংগঠকদের অর্থে গড়া স্টেডিয়াম। এই মাঠে যে কেবল খেলাধুলা হয় তা কিন্তু না। এখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে। এই স্টেডিয়ামে কেবল জেলা ক্রীড়া সংস্থার লিগ বা টুর্নামেন্ট হয় তা কিন্তু না। এখানে আইনজীবী সমাজ, চিকিৎসক সমাজ, সাংবাদিক সমাজ সবার খেলাধুলা হয়ে থাকে। তাই এখন যদি বাফুফে কে এই মাঠ দিয়ে দেওয়া হয় আর সেটা যদি ফিফা নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে এই মাঠ কিংবা এই আঙ্গিনা থেকে চট্টগ্রামের খেলাধুলাকে বিদায় নিতে হবে। আজকে যেমন সুনির্দিষ্ট কারণ এবং অনুমতি ছাড়া জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা যায়না তেমনি এম এ আজিজ স্টেডিয়ামও হয়ে যাবে পরিপূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। তাই খেলাধুলা ছাড়াও চট্টগ্রামের মানুষের আনন্দ ভাগাভাগি বা উদযাপন করার কোন সুযোগ থাকবেনা। তাই এই অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াইয়ে সবাইকে শামিল হতে হবে। সংবাদ স্মেলনে বলা হয় শুধু চট্টগ্রামে নয় দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন স্টেডিয়াম করার মত বিশাল জায়গা রয়েছে। যা সরকারি খাস জায়গা। সে সব জায়গায় নতুন স্টেডিয়াম নির্মান করে সেটা কেবলমাত্র ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দিলে দেশ একটি নতুন স্টেডিাম যেমন পাবে তেমনি একটি জেলার খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা আর থাকবেনা। আর চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা আর দেশের অণ্য সব জেলা ক্রীড়া সংস্থার মত নয়। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা ৩০ টির ও বেশি ইভেন্ট আয়োজন করে। দেশের অনেক জেলা একটি ইভেন্টও আয়োজন করেনা। কাজেই সে সব জেলায় গিয়ে ফুটবল স্টেডিয়াম করার আহবান চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের। এরই মধ্যে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। যতদিন এই সিদ্ধান্ত বাতিল না হবে ততদিন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন ক্লাবের কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরংপুরকে হারিয়ে ফাইনালে আশা জিইয়ে রাখল খুলনা
পরবর্তী নিবন্ধগ্র্যামির সর্বোচ্চ পুরস্কার জিতলেন বিয়ন্সে