পটিয়া ও কর্ণফুলীতে দেড় শতাধিক মোটর রিকশা পার্কিং স্টেশন মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। এসব পার্কিং স্টেশনে নেই কোনো ফায়ার লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। যার কারণে গত এক বছরে পটিয়া ও কর্ণফুলীর বেশ কয়েকটি পার্কিং স্টেশনে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বেশ কিছু শ্রমিক ও মোটর রিকশা ও অটোরিকশার মালিক।
জানা গেছে, ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে পটিয়া উপজেলা গঠিত। অপরদিকে ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে কর্ণফুলী উপজেলা। এই দুই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ৭ থেকে ১২টি পর্যন্ত মোটর রিকশার পার্কিং স্টেশন রয়েছে। এসব পার্কিং স্টেশনে ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলেও সেখানে এসবের কোনো বালাই নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো প্রশাসনিক তদারকিও নেই। যার ফলে মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলার দেড় শতাধিক পার্কিং স্টেশন। গত নভেম্বর মাসেও কর্ণফুলী উপজেলার ব্রিজঘাট এলাকায় একটি পার্কিং স্টেশনে অগ্নিদুর্ঘটনায় প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়–ক্ষতি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পটিয়ায় মোটর রিকশা পার্কিং স্টেশনের এক মালিক জানান, সব পার্কিং স্টেশনেই চলছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ ও বৈদ্যুতিক মিটার নিয়েই এসব পার্কিং স্টেশন প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণের বিষয়ে কোনো দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান আমাদের কিছুই জানায়নি। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। যদি সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়া যায় তাহলে আমরা এ আইন বা নিয়মটি অবশ্যই মানতে বাধ্য থাকব।
জানতে চাইলে পটিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার সাইদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফায়ার লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার নিয়ম রয়েছে। তবে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ফায়ার সার্ভিস বিভাগের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টরের। এ বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
জানতে চাইলে পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. জিহাদ মিয়া বলেন, পার্কিং স্টেশন কোনো ওয়ার্কশপ এমনকি কারখানাও নয়। এর কোনো একটা হলে আমরা লাইসেন্স দিই। তবে এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে থাকি। কর্ণফুলী ফায়ার মডার্ন সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ ইমরান হোসেন জানান, কর্ণফুলীতে গত নভেম্বর মাসেও একটি পার্কিং স্টেশনে অগ্নিদুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরপর আমরা বেশ কয়েকটি পার্কিং স্টেশনে গিয়ে তাদের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। মালিকপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ধরনের কর্ণপাত করছেন না। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চাইলে উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা ও ফায়ার লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে বাধ্য করতে পারি। তবে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো সময় কোনো ধরনের সহায়তা চাওয়া হয়নি বলেও তিনি দৈনিক আজাদীকে জানান।