হকার, ভিক্ষুকের উৎপাতে অতিষ্ঠ পর্যটক

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার | শনিবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ভ্রাম্যমাণ হকার ও ভিক্ষুক প্রবেশে নিষেধ রয়েছে। এ নিয়ে কড়াকড়ির কথাও জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু বাস্তব চিত্র উল্টো। বিচকর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো বাধা ছাড়াই সমুদ্র সৈকতে বিচরণ করে ভিক্ষুক ও ভ্রাম্যমাণ হকাররা। ভিক্ষুকের সারিতে রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনও। তাদেরকে ভিক্ষা না দিলে মিলে না নিস্তার। তাদের পদচারণায় নানাভাবে অতিষ্ঠ হচ্ছেন পর্যটকরা।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধ্যা, লাবণী ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা মিলেছে অগণিত হকার ও ভিক্ষুকের। শিশু, বৃদ্ধ ও নারীসহ বহু ভিক্ষুক ঘুরেঘুরে পর্যটকদের কাছ থেকে হাত পেতে ভিক্ষা চাচ্ছে। অনেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পা ধরে ভিক্ষা আদায়ের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাদাম, ঝালমুড়ি, চানাচুর, চিপস, পানি ও সিগারেট বিক্রেতাসহ অগণিত হকার ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। এসব হকারদের কারণে তিক্তবিরক্ত পর্যটকরা।

পর্যটকদের অভিযোগ, এতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র; কিন্তু অযাচিত হকার ও ভিক্ষুকদের উৎপাতে পর্যটকরা বেশ ভোগান্তিতে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে অতিষ্ঠও করা হচ্ছে পর্যটকদের।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক শাহনাজ বেগম বলেন, বিকেলের দিকে আমরা বিচে নেমে কিটকটে বসি। কিন্তু যেই বসেছি, তখন থেকে কাছে এসে কিছু কেনার জন্য রীতিমতো অতিষ্ঠ করে তুলেছে সব ধরনের হকার। আমাদের যে কিছু দরকার নেই; সেটা বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে গেছি। কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক আবিদুর রহমান বলেন, কিটকটে বসে একটু মনের সুখে আনমনে সমুদ্রের গর্জন দেখছিলাম। কিন্তু বয়স্ক এক মহিলা ভিক্ষুক এসে টাকার জন্য জোর করছে। বেশ কয়েকবার না করার পর বিরক্ত করছে।

হকার ও ভিক্ষুকদের উৎপাতে নষ্ট হচ্ছে পর্যটকদের ভ্রমণ আনন্দ। বিঘ্ন হচ্ছে সমুদ্র দর্শনসহ সার্বিক সৌন্দর্য অবলোকনে। তাই পর্যটক ও ভিক্ষুক রোধ করা দরকার বলে মনে করেন পর্যটকরা। এ প্রসঙ্গে সমুদ্র সৈকত ঘুরতে আসা চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী শাহনেওয়া করিম বলেন, পর্যটনের পরিবেশ ও ভাষা আলাদা হওয়া উচিত। পর্যটনের এলাকায় ভিক্ষুক ও হকারের উৎপাত করা যায় না। এতে পর্যটকদের বেড়ানোর ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হয়। আমি সিলেট, রাঙামাটি ও বান্দরবানসহ বিভিন্ন পর্যটক কেন্দ্র ঘুরেছি। কিন্তু কঙবাজারের মতো হকারভিক্ষুকের উৎপাত কোথাও দেখিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সৈকতে ভিক্ষুক ও হকার প্রবেশে প্রশাসনিকভাবে সম্পূর্ণ নিষেধ রয়েছে। তারপরও কোনো বাধা ছাড়াই উৎপাত করেছে তারা। অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় বিচকর্মী কিছু হকার থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করেন।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তানভীর হোসেন বলেন, হকার ও ভিক্ষুক নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান জোরদার রাখা হয়। গত ১৫ দিনে কয়েক দফায় বড় আকারে অভিযান করা হয়েছে। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিদিন অভিযান করা হয়। তারপরও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মূলত আমাদের জনবল সংকটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিলা কেটে স্থাপনা নির্মাণ, এক ব্যক্তিকে দেড় মাসের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধবিয়ে করলেন সারজিস আলম