চট্টগ্রাম ওয়াসা পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ৩ হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু করেছিল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। গত ৫ মাসে চান্দগাঁও খাজা রোড এলাকায় মাত্র ২ হাজার ২৯৩টি মিটার বসানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, ৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার স্মার্ট মিটার প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম এনালিস্ট শফিকুল বাশার। তিনি গত সেপ্টেম্বর মাসে ১ বছরের শিক্ষা ছুটি নিয়ে দুবাই চলে যান। শফিকুল বাশার দুবাই চলে যাওয়ার পর এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছেন তার স্ত্রী চট্টগ্রাম ওয়াসার একই দপ্তরের কম্পিউটার প্রোগ্রামার লুৎফি জাহান। প্রকল্পের ব্যাপারে জানার জন্য তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে প্রকল্প সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, আমেরিকার যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে তাদের লোকাল এজেন্ট পদ্মা স্মার্ট টেকনোলজি মিটার বসানোর কাজ করছে। যে এলাকায় স্মার্ট মিটারগুলো বসানো হচ্ছে ওই এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে এই ডিজিটাল মিটারে। মিটার রিডারদের কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যে মিটার ব্যবস্থা ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক কাজী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্মার্ট মিটারগুলো যেসব এলাকায় বসানো হচ্ছে সেসব এলাকায় ওয়াসার পানির মিটারে আর কোনো রিডার লাগবে না। হিউম্যান টাচ ছাড়াই মিটারের রিডিং অটো চলে আসবে আমাদের সেন্ট্রাল সার্ভারে। এটা চালু হয়ে গেলে পানি চুরি বন্ধ হয়ে যাবে। পানির অপচয়ও কমবে। যা বিশ্বমান অনুযায়ী হবে।
২০২০ সালের শুরুর দিকে লোরা গেটওয়ে ভিত্তিক ৫টি স্মার্ট মিটার পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়। নগরীর লালখানবাজার এলাকার হাইলেভেল রোড ও বাঘঘোনায় বসানো হয় এসব পরীক্ষামূলক মিটার। ব্যবহারে এসব মিটারের কার্যকারিতার সফলতা পেয়ে এই পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। মিটারগুলো বসানোর আগে পরীক্ষার জন্য বুয়েটে পাঠানো হলে বুয়েট থেকে পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর চট্টগ্রাম ওয়াসা পাইলট প্রকল্পটি গ্রহণ করে।
এদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসা গ্রাহক পর্যায়ে বিলিং প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে ‘মোবাইল রিডিং অ্যাপস’ চালু করতে যাচ্ছে।
গ্রাহক পর্যায়ে এই প্রক্রিয়া শতভাগ বাস্তবায়ন হলে বিলিং প্রক্রিয়ায় (গড় বিল ও সিস্টেম লস) গ্রাহকের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমন দে। তিনি বলেন,
জাইকার কারিগরি সহায়তায় গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে বিলিং প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে গ্রাহকের ভোগান্তি লাঘবে মোবাইল রিডিং অ্যাপস এর মাধ্যমে বিল জারি এবং বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা।
প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে নগরীর ১৪টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু অংশে। এই পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সুফল পাওয়া গেলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ৭৮ হাজার ৫৪২ জন আবাসিক গ্রাহকের সব মিটার এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমন দে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার ডিজিটাল মিটার বসানো হচ্ছে। এতে সফলতা আসলে সব গ্রাহকদের এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে।