তীরে এসে তরী ডুবাল খুলনা টাইগার্স। শেষ চারের পথে এগিয়ে যাওয়ার বেশ ভাল সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সেটাকে কাজে লাগাতে পারেনি খুলনার ব্যাটাররা। বিশেষ করে ওপেনার নাঈম শেখের ধীর গতির ব্যাটিং ম্যাচ হারের অন্যতম কারণ। শেষ পর্যন্ত হারতে হলো খুলনাকে। যদিও নাঈম শেষ দিকে বেশ মারমুখি হওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারলেন না দলকে জেতাতে। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও শেষ পর্যন্ত ৭ রানে হেরেছে খুলনা টাইগার্স। এই জয়ের ফলে ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো ফরচুন বরিশাল।
অপরদিকে ৮ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে মিরাজের খুলনা টাইগার্স। জয় দিয়ে বরিশাল শেষ করল বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব। অপরদিকে আজ আরো একটি ম্যাচ রয়েছে খুলনার। সিলেটের বিপক্ষে খেলবে মিরাজরা। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বরিশাল প্রথম ওভারেই বেশ জোরে ধাক্কা খায়। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তামিম ইকবাল। পরের বলে সবচাইতে ভয়ংকর ব্যাটার ডেভিড মালানকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ওভারেই নেই দুই উইকেট। তৃতীয় ওভারে ফিরেন অভিজ্ঞ মুশফিক। রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। এর পর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদউল্লাহ। শুরু থেকেই বেশ ভাল খেলতে থাকা হৃদয় ফিরেন মাহমুদউল্লাহর সাথে ৪৭ রান যোগ করে। ৩০ বলে ৩৬ রান করে মিরাজের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন হৃদয়। পরের ওভারে ফিরলেন মোহাম্মদ নবী। ৬৪ রানে নেই বরিশালের ৫ উইকেট। তবে দলকে টানেন মাহমুদউল্লাহ। সঙ্গে পেয়েছিলেন রিশাদ হোসেনকে।
নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৫ বলে ৫০ রান করে জিয়াউর রহমানের বলে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর রিশাদ হোসেন টেনে নিয়ে যান দলকে। রান আউট হয়ে ফেরার আগে ১৯ বলে ৩৯ রান করেন এই লেগ স্পিনার। শেষ পর্যন্ত খাদের কিনারা থেকে ১৬৭ রানে পৌঁছে বরিশালের ইনিংস। খুলনা টাইগার্সের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন মিরাজ।
জবাবে ব্যাট করতে নামা খুলনার শুরুটাও বিবর্ণ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেন ইমরুল কায়েস। দলের রান তখন ৬। শুরুর ধাক্কা সামলে নাঈম এবং মিরাজ মিলে যোগ করেন ৫৯ রান। ২৯ বলে ৩৩ রান করা মিরাজকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ নবী। আলেঙ রঙ এসে খেলেছেন ৮ বল। রিশাদের বলে সাজঘরে ফিরেছেন রঙ। নাঈম শুরু থেকে খেললেও ক্রমশ ধীর গতিতে ব্যাটিং করতে থাকেন। যা টি–টোয়েন্টির সাথে বড় বেমানান। যদিও ধীরে ধীরে নিজেকে ফিরে পাবার চেষ্টা করেছেন এই ওপেনার। আফিফকে নিয়ে এগুচ্ছিলেন জয়ের দিকে। দুজন মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু জাহানদাদ এসে ভাঙেন সে জুটি। যদিও আগের বলে জীবন পান আফিফ। কিন্তু পরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন আফিফ ১৭ বলে ২৭ রান করে। ওভারের পঞ্চম বলে মাহিদুল ফিরেন রান আউট হয়ে। আর তাতেই ক্রমশ ফিকে হয়ে আসে খুলনার জয়ের সম্ভাবনা।
শেষ দুই ওভারে খুলনার দরকার পড়ে ৩৫ রানের। ফাহিম আশরাফের করা ১৯ তম ওভার থেকে ১০ আসে। ফলে শেষ ওভারে দরকার খুলনার ২৫ রান। রিপন মন্ডলের করা ওভারের প্রথম বল ডট। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলকে সীমানা পার করে দুটি ছক্কা মারেন নাঈম। চতুর্থ বলে নাঈমকে ফেরান রিপন মন্ডল। ৫৯ বলে ৭৭ রান করে ফিরেন নাঈম। পঞ্চম বলে চার মারেন আমির জামাল। শেষ বলে দরকার ৯ রান। কিন্তু নিতে পেরেছেন এক রান। ফলে ৭ রানে হেরে নিজেদের শেষ চারে যাওয়া কঠিন করে তুলল খুলনা। ম্যাচ সেরা হন ফরচুন বরিশালের রিশাদ হোসেন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের এসএভিপি ও হালিশহর শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ ফিরোজ আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, বিসিবি পরিচালক মনজুর আলম মঞ্জু এবং ফরচুন বরিশালের ওনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। আজকের খেলা: দুর্বার রাজশাহী–রংপুর রাইডার্স (দুপুর ১: ৩০টা), খুলনা টাইগার্স–সিলেট স্ট্রাইকার্স (সন্ধ্যা ৬: ৩০টা)।