বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতেই তার দল বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করছে। দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে ভবিষ্যতে নজর দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সরকারকে এ জন্যই সহযোগিতা করছি, যাতে করে দেশ যত দ্রুত সম্ভব একটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। কারণ, এর কোনো বিকল্প নেই। এর বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া করতে গেলে, মানুষের মনে সন্দেহ ও ভিন্ন ধারণা তৈরি হবে। সেটা হবে অগণতান্ত্রিক। আমরা শেখ হাসিনার পতনের আগেই ৩১ দফা এবং ৭ বছর আগে ভিশন–২০৩০ ঘোষণা করেছি। যা বাস্তবায়নে আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দ ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়ন ও উন্নয়নে বহির্বিশ্ব বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। খবর বাসসের।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাটের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জনি, মহিউদ্দিন আহমেদ ঝিন্টু, ফ্লোরিডা বিএনপির সভাপতি ইমরানুল হক চাকলাদার, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, কামরুজ্জামান বাবু, কাউন্সিলর সুরাইয়া, অস্ট্রেলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন হাওলাদার আরিফ, কানাডা মহিলা দলের নাজমা হক, কানাডা নর্থ বিএনপির সভাপতি তৌফিক এজাজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
‘জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের সফলতা মানে দেশের ১৮ কোটি মানুষের সফলতা’– এ কথা উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ওই আন্দোলনে যার যার অবস্থান থেকে সকলেরই অবদান আছে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদেরও সম–অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, অনেকেই বলে থাকেন, প্রবাসীরা–তো নিরাপদ জোনে থেকে আন্দোলন করেছে। কিন্তু তাদের পরিবার ও স্বজনরা বাংলাদেশে কীভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, তা আমরা জানি। বাংলাদেশের মতো এতো সহজে প্রবাসে আন্দোলন করা যায় না। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বা বিশ্ব ব্যাংকের সামনে জমায়েত হওয়া এতো সহজ না। তারপরও বিএনপির হাজার হাজার লোক রাজপথে আন্দোলন করেছেন। আমরা তাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে যা করা দরকার, সেদিকে আমরা নজর রাখবো, ইনশাআল্লাহ। আমীর খসরু বলেন, প্রবাসীরা কিন্তু বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ও রেমিট্যান্স বন্ধ করে দু’ভাবেই যুদ্ধ করেছে। তারা দেশ ও জাতির প্রতি কমিটমেন্ট রেখেছে। তার ফলাফল কিন্তু জাতি পেয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার পতনের পেছনে প্রবাসীদের অবদান নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি করারও পরামর্শ দেন। আমীর খসরু বলেন, অনেকেই আন্দোলনে অনেক পরে যোগ দিয়েছেন। তারা কিন্তু আমেরিকায় হোয়াইট হাউসের সামনে এবং ব্রাসেলস, জাপান, লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়ার আন্দোলন দেখেনি। এই আন্দোলনের পেছনে ড্রাইভ দিয়েছেন তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়াও ড্রাইভ দিয়েছেন। তিনি নিজে জেল খেটেছেন। পুরো আন্দোলন ড্রাইভ করেছে বিএনপি। এটা রেকর্ড থাকা দরকার। স্বৈরাচারী সরকার তো দেশের মালিকানা নিজেদের হাতে নিয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ আজ খাদের কিনারে। তাই, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। সংস্কারকে একটা চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত না থাকায় দেশের এই সংকট। আপনারা বিশেষ কিছু সংস্কার করতে চাইলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসুন। শুধু ৫/১০ জন বসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায় না। সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই, জনগণের কাছে যেতে হবে।