সাকিবের রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে তাসকিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৭:১৭ পূর্বাহ্ণ

এবারের বিপিএলে মোটেও ভাল সময় যাচ্ছেনা দুর্বার রাজশাহীর। একের পর এক হেরেই যাচ্ছে দলটি। তবে দল হারলেও বল হাতে দুর্বার দলটির আগের ম্যাচে অধিনায়কত্ব পাওয়া তাসকিন আহমেদ। বলা যায় নামের প্রতিফলন পড়েনি দুর্বার রাজশাহীর পারফরম্যান্সে। তাদের পারফরম্যান্স দেখে সামাজিক মাধ্যমে মজা করে বলা হচ্ছে দুর্বল রাজশাহী। তবে দলের নামকে দারুণভাবেই পারফরম্যান্সে ধারণ করেছেন তাসকিন আহমেদ। শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করে চলেছেন অভিজ্ঞ পেসার। বিপিএল ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার এক আসরে ২০ উইকেট স্পর্শ করা পেসারের সামনে এখন রেকর্ডের হাতছানি। চিটাগং কিংসের বিপক্ষে গত সোমবার দল বিশাল ব্যবধানে হারলেও যথারীতি কার্যকর বোলিংয়ে দুই উইকেট নেন তাসকিন। চলতি আসরে প্রথম বোলার হিসেবে ২০ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। এবার তার ধারেকাছে নেই আর কোনো বোলার। বিপিএল এক আসরে ২০ উইকেট শিকারের স্বাদ একাধিকবার পাওয়া তৃতীয় বোলার তিনি। এর আগে এই কীর্তি ছিল সাকিব আল হাসান (২০১৭ ও ২০১৯) ও রুবেল হোসেনের (২০১৯ ও ২০১৯২০)। তাসকিন ২২ উইকেট নিয়েছিলেন ২০১৯ আসরে সিলেট সিঙার্সের হয়ে। এই অর্জনে সাকিবকে স্পর্শ করলেও আরেকটি জায়গায় এখনও সবার ওপরে তিনি। বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের। ২০১৯ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ২৩টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

তাসকিনের এবার ২০ উইকেট হয়ে গেছে ৯ ম্যাচে। প্রাথমিক পর্বে আরও তিনটি ম্যাচ বাকি আছে রাজশাহীর। গত ম্যাচ থেকে দলের অধিনায়ক করা হয়েছে তাকে। ইনজুরি আঘাত না করলে বাকি তিন ম্যাচেও তিনি খেলবেন নিশ্চিতভাবেই। যে ধরনের ফর্মে তিনি আছেন, সাকিবকে টপকে না গেলেই বরং সেটি হবে বিস্ময়কর। তার দলের প্লেঅফ খেলার সম্ভাবনা টিকে আছে এখনও। যদি প্লেঅফ খেলতে পারে রাজশাহী, তাসকিনও তাহলে সুযোগ পাবেন রেকর্ড গড়ার কিংবা আরও সমৃদ্ধ করার। এবার আসরের উদ্বোধনী ম্যাচ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে তিন উইকেট নিয়ে তাসকিন শুরু করেন বিপিএল অভিযান। পরের ম্যাচে তিনি তোলপাড় ফেলে দেন ক্রিকেট বিশ্বে। একা গাদা রেকর্ড গড়েন ১৯ রানে ৭ উইকেটের চমকপ্রদ পারফরম্যান্সে। এরপর সাত ম্যাচের পাঁচটিতেই তিনি উইকেট পান দুটি করে। যে দুটি ম্যাচে উইকেট পাননি, সেই দুই ম্যাচেও তার বোলিং ছিল যথেষ্ট আঁটসাঁট। রান জোয়ারের এবারের বিপিএলেও তিনি এই ২০ উইকেট নিয়েছেন ওভারপ্রতি মাত্র ৬.৬০ রান দিয়ে। বেশির ভাগ ওভারই তিনি করেছেন পাওয়ার প্লেতে ও শেষের ওভারগুলোয়। পেসারদের মধ্যে বিপিএলে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড ২২টি। তাসকিন নিজেও যেটি করেছিলেন ২০১৯ আসরে। এছাড়াও আরও পাঁচ পেসারের আছে এই কীর্তি। ২০১৫ আসরে বরিশাল বুলসের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সে মাত্র ৯ ম্যাচ খেলেই ২২ উইকেট নিয়েছিলেন কেভন কুপার। এছাড়াও ২০১৯ আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ২২ উইকেট শিকার করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। একই আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে সমান উইকেট নেন রুবেল হোসেন ও গত আসরে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে ২২ উইকেট আদায় করেন শরিফুল ইসলাম। সতীর্থদের কাছ থেকে আরেকটু সহায়তা পেলে অবশ্য এর মধ্যেই রেকর্ডটি হয়ে যেতে পারত তাসকিনের। জাতীয় দলে তার বোলিংয়ে ক্যাচ পড়ার যে ধারা, তা দেখা গেছে এবার রাজশাহী দলেও। বেশ কটি ক্যাচ পড়েছে তার বোলিংয়ে। সোমবার চিটাগংয়ের বিপক্ষেও তার বোলিংয়ে দুটি ক্যাচ নিতে পারেননি ফিল্ডাররা। তার পরও রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা তাসকিনের ভালোভাবেই আছে। রাজশাহীর বোলিং আক্রমণে কেবল তিনি ছাড়া ধারাল বোলার নেই একজনও। গোটা আসরে ৫ উইকেটের বেশি নেই দলের আর কোনো বোলারের। প্রতিপক্ষ দলগুলি তাই তাকে সাবধানে খেলে অন্যদেরকে আক্রমণ করার পথও বেছে নিয়েছেন। তিনি তবু উইকেট আদায়ের পথ খুঁজে নিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবি শাহজালাল হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধবিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের শেষ রাউন্ড শুরু আজ