ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পট পরিবর্তনের পর বেসরকারি স্কুল ও কলেজের যেসব শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছিল, তাদের বেতন–ভাতা আপাতত চালু থাকবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পদত্যাগ করানো অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগ রয়েছে, তা বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বলছে, তদন্ত প্রতিবেদন আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষকদের বেতন–ভাতা চালু থাকবে। জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে আলাদা আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। খবর বিডিনিউজের।
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে দলটিকে বিভিন্নভাবে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তুলে এর পর বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের হেনস্তা ও জোর করে পদত্যাগ করানোর ঘটনা ঘটে। জোর করে পদত্যাগ করানো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যরা তাদের মূলপদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনায় ফিরে গেছেন। হেনস্তার শিকার সরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদেরও অন্য কর্মস্থলে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু পদত্যাগ করানো বেসরকারি স্কুল–কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছিলেন, তাদের বেতন–ভাতা এতদিন বন্ধ ছিল।
গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ জোর করে পদত্যাগ করানো বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, সিনিয়র প্রভাষক ও প্রভাষকদের বেতনভাতা চালু রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আদেশ জারি করে। উপসচিব মো. আ. কুদ্দুসের সই করা ওই আদেশে বলা হয়, যাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগ আছে, তাদের বিষয়ে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় যথাযথ নির্দেশনা জারি করবে। তদন্ত প্রতিবেদন আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি না হাওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষকদের বেতনভাতা চালু থাকবে।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি জোর করে পদত্যাগ করানো বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকদের বেতনভাতা চালু থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছিল। ওই আদেশে স্বাক্ষর করা উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী বলেন, একই সিদ্ধান্ত জানিয়ে জোর করে পদত্যাগ করানো স্কুল শিক্ষকদের বেতন আপাতত চালু রাখার কথা বলা হয়েছিলো ওই আদেশে।
ওই দুই আদেশেই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বলেছে, গত ১৭ ডিসেম্বর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডগুলো কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল সভায় জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের বিষয়ে তদন্ত ও তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের বেতন–ভাতা চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।