চকরিয়ায় প্রকাশ্য দিনের বেলায় ঘরে ঢুকে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম ও লুটপাটের ঘটনা তদন্ত করে চার সপ্তাহের মধ্যে সিআইডিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিনের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম বাদী হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। এ সময় আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল কবির শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে (এক মাস) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চকরিয়ার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের কদ্দাছড়া গ্রামের ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিনের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তাঁর স্বামী পশুর খামার গড়ে তুলে গবাদিপশু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ১৭ জানুয়ারি বিকেলে সশস্ত্র একদল ডাকাত ও সন্ত্রাসী বসতবাড়ির বাউন্ডারি দেওয়ালের গেট ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা আলমিরা ভেঙে লুট করে নেয় পশু বিক্রির নগদ ২০ লক্ষ টাকা, পাঁচ ভরি স্বর্ণ এবং পাশের গোয়াল ঘরে রক্ষিত প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা মূল্যের ১২টি গবাদী পশু। তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তাদের গুলিতে নাছিরের দুই চোখও জখম হয়।
এমনকি এই ঘটনা চলাকালে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯–এ ফোন দেওয়ার পর পুলিশ উপস্থিত হলেও তাদের সামনে আরও বেপরোয়া হয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লুটপাট অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
আহত ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন– সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী গ্রামের বেলাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, আবদুল মালেক বাবু, রিয়াজ উদ্দিন, মো. সিফাত, নুরুচ্ছফা, হেলাল উদ্দিন, মোকাদ্দেছ, হেলাল, পশ্চিম পাড়ার কাইছার, নুরুল হক, আবদু জলিল এবং পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের কদ্দাছড়াস্থ নয়াপাড়ার সাকিব, ফরিদুল আলম, পাইল্লা পাড়ার বাপ্পি ও মারুফুল ইসলাম।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট লুৎফুল কবির, মিফতাহ উদ্দিন আহমদ ও মীর হোছাইন।
তারা দৈনিক আজাদীকে জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবসায়ীর বসতবাড়িতে ঢুকে ডাকাতি, লুটপাট ছাড়াও ব্যবসায়ীকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো এমন ঘটনা নজিরবিহীন। থানা পুলিশের কাছ থেকে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা না পাওয়ায় ভুক্তভোগী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতের বিচারক শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সিআইডি কঙবাজারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।