কোটার ১৯৩ জনের ফল স্থগিত

মেডিকেল ভর্তি

| মঙ্গলবার , ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত ১৯৩ জনের ফল স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। সংস্থার অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন বলেছেন, প্রয়োজনীয় যাচাইবাছাই শেষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রোববার ২০২৪২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৫,৩৭২ জন নির্বাচিত হয়, যাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটার ১৯৩ জন রয়েছেন। কম নম্বর পেয়েও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেনএমন যুক্তি দিয়ে সমালোচনা করছেন কেউ কেউ। প্রকাশিত ফলকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে রোববার রাতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ দেখান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী। তারা ফল বাতিলের দাবিও তোলেন।

অধ্যাপক রুবীনা ইয়াসমীন গতকাল সোমবার বলেন, তাদের ফলাফল আপাতত স্থগিত থাকবে। আমরা তাদের কাগজপত্র যাচাই করব। সেজন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারিএই তিনদিন তারা সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আসবে। সন্তান ছাড়া অন্য কেউ এই তালিকায় রয়ে গেছে কি না তা আমরা যাচাই করব। যদি সন্তান ছাড়া অন্য কেউ লিস্টে থাকে, তাহলে তার স্থান পাওয়ার কোনো সুযোগই না। অধ্যাপক রুবীনা বলেন, এটা প্রাথমিক ফলাফল। সবকিছু ফাইনাল হবে কাগজপত্র দেখার পর। অন্য সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার কাগজপত্র যাচাইবাছাই হয় সংশ্লিষ্ট কলেজে, এবার কলেজে যাওয়ার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে আসেন, সেখানে কমিটি করে দিয়েছি। তারা তিনদিন বসবে, বসে সবকিছু যাচাই করবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন গতকাল সোমবার বলেন, এবার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের কোটায় ২৬৯টি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী কোটায় ৩৯টি আসন ছিল। আবেদন করা হয় ডিজিটালি, ফলে ওইখানে সত্য না মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ নাই। সবাই যার যার মত আবেদন করে। পরে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোয় যাচাই করা হয়। এবার আমরা আগে থেকেই তাদের সময় দিয়েছি তাদের পিতা বা মাতার মুক্তিযোদ্ধা সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদের এখানে আসবে। ২৭ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা তাদের কাগজপত্র যাচাই করব। ততক্ষণ পর্যন্ত এই ১৯৩ জনের ভর্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বাকিদের ভর্তি কার্যক্রম চলবে। তিনি বলেন, এ বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য ২৬৯টি আসন বরাদ্দ ছিল। তবে ন্যূনতম ৪০ নম্বর না পাওয়ায় সেটি পূরণ হয়নি। ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ১৯৩ জন নির্বাচিত হয়েছিল। ফলে ৭৬টি আসন এমনিতেই খালি আছে যেগুলো মেধা কোটা থেকে পূরণ করা হয়েছে। এখন যাচাইবাছাই করার সময় হয়ত আরও ১০০ বা ১২০ জনের মত বাদ পড়ে যাবে। সেগুলোও মেধা কোটা থেকে পূরণ করা হবে। এর আগে দুপুরে ঢাকার একটি হোটেলে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, কোটা বাতিলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেখানে মূল পরিবর্তন হলোনাতিনাতনির পরিবর্তে সন্তানের কথা বলা হয়েছে। অতএব কোটার বিষয়টিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাও প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী হয়েছে। তার পরও এটা স্ক্রুটিনি করা হবে। বিশেষ সহকারী সায়েদুর বলেন, ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের মধ্যে ১৯৩ জনের মধ্যে খুবই আনইউজুয়াল হবে, যাদের বয়স ৬৭৬৮ এবং যাদের সন্তান থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সেখানে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে সেটা দেখা হবে। এমবিবিএস পরীক্ষায় মূল কোটা থাকবে কি থাকবে নাএই নীতিগত সিদ্ধান্তটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি রাষ্ট্রের। আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি বিষয়টি যাচাই করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগ্রাহকের বিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধবায়নার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ব্যবসায়ী কারাগারে