ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সংবিধানের অঙ্গীকার, দুর্নীতি বিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলের প্রস্তাবসহ ৪৭ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। দুদককে শক্তিশালী করতে আট সদস্যের কমিশনের তৈরি করা সংস্কার প্রতিবেদন নিয়ে গতকাল সরকার প্রধানের কার্যালয়ে কথা বলছিলেন দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি দুর্নীতি দমন কমিশনের মত প্রতিষ্ঠান কোন দেশেই এবং বাংলাদেশেও এককভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তার উপরে কেন্দ্রীয় দায়িত্ব নীতিনির্ধারণের কিন্তু তার জন্য উপযুক্ত রাষ্ট্র এবং সামাজিক পরিবেশ লাগে। পুরো রাষ্ট্র এবং সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হয় এর অবকাঠামোতে। সেই বিবেচনায় আমরা আমাদের সংবিধানের ২০ এর ২ অনুচ্ছেদে যেটা আছে সেটার সংশোধন করতে চাই। সেটা হচ্ছে, সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সংবিধানের একটা অঙ্গীকার। তার কথায়, রাষ্ট্র এবং আইনি ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও সুবিধা অর্জনে যে ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে সেটা প্রতিরোধ করতে তার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক অঙ্গীকার লাগবে। যদিও এর সুযোগ আমাদের সংবিধানে আছে।
দুর্নীতি বিরোধী কৌশলপত্র তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো জাতীয় দুর্নীতি বিরোধী কৌশল নাই।কোন নীতিমালা নাই। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে সুপারিশ করছি, কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে। যার মধ্যে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক কাঠামোতে দুর্নীতি বিরোধী শুধু প্রত্যয়ই না, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যে অঙ্গীকারগুলে দরকার, দায়িত্ব এবং কর্তব্য সেটি নির্ধারণ করা।
দুর্নীতি বিরোধী কৌশল প্রতিপালিত হচ্ছে কী না সেটি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্য সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ন্যায়পালের গুরুত্ব তুলে ধরেন এই সংস্কার কমিশনের প্রধান। তিনি বলেন, ন্যায়পালের একটা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যাদের দায়িত্ব হবে এই কৌশলের বাস্তবায়ন বা প্রতিফলনের মূল্যায়ন করা। ধারাবাহিকভাবে, নিয়মিতভাবে। দুর্নীতি রুখতে কালো টাকা সাদা করার বৈধতা স্থায়ীভাবে বন্ধ চাইছেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, এরপর যেটা জোরালোভাবে সুপারিশ করতে চাই, কালো টাকা বৈধতা দেওয়ার বাৎসরিক রীতি আমাদের রাষ্ট্রীয় বা সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে বাংলাদেশে, সেটির চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের নিয়ে তার ভাষ্য, আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের সাধ্যমত যাতে মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন করে এমন একটি প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য। এবং সে লক্ষ্যেই অন্যান্য কমিশনের মত যথাযত গবেষণা এবং জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রম শেষ করেই আমাদের প্রতিবেদন সম্পন্ন করেছি।