এবারের বিপিএলে হারটাই যেন ঢাকা ক্যাপিটালসের নিত্য সঙ্গী। গতকালের আগ পর্যন্ত ৬ ম্যাচের ৬টিতেই হেরেছে লিটন দাশরা। তবে সপ্তম ম্যাচে এসে একেবারে বারুদের মত জ্বলে উঠল ঢাকা। যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে দীর্ঘ সময় রান খরায় ভুগতে থাকা লিটন দাশ। তার এবং তানজিদ তামিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সুবাধে বিশাল জয় পায় ঢাকা। অনেক রেকর্ডের এই ম্যাচে ঢাকার জয়টাও রেকর্ড গড়া ১৪৯ রানের। লিটন দাশ এবং তানজিদ তামিমের ব্যাটে রানের পাহাড়ে চড়েছিল ঢাকা। যেখানে আগে কোন দল যেতে পারেনি। পরে বল হাতে আগুন ঝরান রাহি, মুকিদুল, ফরমান উল্লাহরা। আর তাতেই ঢাকা পায় প্রথম জয়। তাও আবার রেকর্ড গড়ে। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ঢাকার দুই ওপেনার শুরুটা কিছুটা দেখেশুনেই করেন। প্রথম চার ওভারে তারা নেন ২২ রান। আক্রমণের শুরুটা হয় পঞ্চম ওভার থেকে। সানজামুলের ওই ওভারের প্রথম চার বলেই চার মারেন তানজিদ। মেহরব হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন লিটন দাস। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৯ রান আসে। ১০ ওভারে ঢাকার রান হয় ১১৫। এর মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়ে যায় তানজিদ ও লিটন দুজনেরই। ১৬তম ওভারে শফিউল ইসলামের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। মাত্র ৪৪ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান তিনি। ইনিংসে শেষ ওভারের প্রথম বলে শফিউলকে চার মেরে সেঞ্চুরি পূরন করেন তানজিদ। ইনিংস শেষের তিন বল বাকি থাকতেই শফিউলকে তুলে মারতে গিয়ে সোহাগ গাজীর হাতে তানজিদ ক্যাচ দিলে রেকর্ড জুটির অবসান ঘটে। ৬৪ বলে ৬টি চার এবং ৮টি ছক্কার সাহায্যে ১০৮ রান করে ফিরেন তানজিদ। ততক্ষণে ১১৮ বলে ২৪১ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন লিটন ও তানজিদ। বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের জুটির আট বছর আগের রেকর্ড ভেঙে দেন তারা ২০১৭ সালে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইল ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন। সেটিই ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। এবার তা ছাড়িয়ে গেলেন লিটন ও তানজিদ। লিটন শেষ পর্যন্ত ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ৫৫ বলে ১২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ২ বলে সাব্বিরের ৭ রানের ইনিংসে যোগ করে ঢাকা পায় ২৫৪ রানের সংগ্রহ। বিপিএলে কোনো দলের এটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান করেছিল রংপুর। বিশাল রানের পাহাড়ে চড়তে গিয়ে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে দুর্বার রাজশাহী। প্রথম ওভারের শেষ বলে ফিরেন মোহাম্মদ হারিস। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ফিরেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়। দুজনই রানের খাতা খুলতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন ফিরেন ১১ রান করে। পরের ওভারে আবু জায়েদ রাহির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন আকবর আলি। সপ্তম ওভারে মোসাদ্দেক সৈকতের শিকার হয়ে ফিরেন মেহেরব। ৩৪ রানে ৫ উইকেট নেই রাজশাহীর। লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে রাজশাহীর ভরসা তখন রাব্বি এবং বার্ল। কিন্তু তারাও পারলেননা ১৭ রান করে ফিরলেন রাব্বি। দলের রান তখন ৬১। রাব্বি আউট হওয়ার পরের বলেই ফিরেন সোহাগ গাজি। মোসাদ্দেকের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সানজামুল যখন ফিরেন তখন রাজশাহীর সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৯৫। তবে দলকে তখনো টানছিলেন রায়ান বার্ল। একটি ছক্কা মেরে দায়িত্ব শেষ করলেন তাসকিন। ফিরলেন ৭ বলে ৯ রান করে। শেষ উইকেট হিসেবে শফিউল রান আউট হয়ে গেলে ১০৫ রানে থামে রাজশাহীর ইনিংস।