এবার ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন চন্দনাইশের হাশিমপুর থেকে অপহৃত আরো ৪ শ্রমিক। অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর মুক্তিপণ দিয়ে তাদের মুক্ত করে আনা হয়।
জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ পাহাড়ি এলাকায় পেয়ারা ও লেবু বাগান পরিষ্কার করতে গেলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ৪ শ্রমিককে অপহরণ করে। অপহৃতরা হলেন, হাশিমপুর ইউনিয়নের ছৈয়দাবাদ ১নং ওয়ার্ডের জুনু মিয়ার ছেলে মো. রহিম (৩৫), মো. হারুন মিয়ার ছেলে বদিউল আলম (৩০), ২নং ওয়ার্ডের আবদুল কাদেরের ছেলে মো. কামাল (৪০) এবং মো. জুনায়েদ (৪৫)।
এর আগে একইদিন সকালে কাঞ্চনাবাদ এলাকার আহমদ হোসেন (৫০) নামে এক কাঠুরিয়াকে অপহরণ করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। ওইদিন বিকেলে পরিবারের সদস্যরা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাকে মুক্ত করে আনেন।
হাশিমপুর সৈয়দাবাদ গ্রামের পেয়ারা ও লেবু বাগান মালিক নুরুন্নবী সওদাগর সাংবাদিকদের জানান, তার পেয়ারা ও লেবু বাগান পরিষ্কার করার জন্য ১০ জন শ্রমিক গত শনিবার বাগানে যান। বিকেলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তাঁদের ধরতে গেলে ৬ জন শ্রমিক পালিয়ে আসতে পারলেও চারজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এসময় শ্রমিকদের একজনের মোবাইল ফোন থেকে সন্ত্রাসীরা কল করে তার কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে তিনি ৬০ হাজার টাকা পাঠানোর পর শ্রমিকদের রাত ১১টার দিকে ছেড়ে দেয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। অপহরণকারীরা উপজাতি এবং সবার বয়স ২০ থেকে ৩০ এর মধ্যে বলে জানিয়েছেন অপহৃতরা।
চন্দনাইশে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের উপদ্রব বৃদ্ধি পেলেও নীরব প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতিরা জানান, অপহরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দিন দিন অপহরণের ঘটনা বাড়ছে। যারা পাহাড় থেকে লাকড়ি সংগ্রহ, চাষাবাদ এবং শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারাই অপহরণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আর স্বজনদের বাঁচাতে পরিবারের সদস্যরা ধারদেনা করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দাবিকৃত মুক্তিপণ পরিশোধ করছেন। এরমধ্যে অপহৃতরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকারও হন। অপহৃতরা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের রুখতে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার জোর দাবি জানান।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান আল হোসাইন জানান, গত শনিবার বিকেলে ৪ জনকে অপহরণের পর ওইদিন রাত ১১টার দিকে তারা বাড়িতে ফিরেছেন বলে তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এরকম ঘটনা ঘটলে কোনো ধরনের তথ্য দিয়েও সহায়তা করা হয় না। আমরা কোনো তথ্য চাইলে নিরাপত্তার অজুহাতে তারা মুখ খুলেন না বলেও জানান তিনি।