নগদে ২৩০০ কোটি টাকা অনিয়মের তথ্য সামনে আনলেন গভর্নর

| সোমবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১০ পূর্বাহ্ণ

নিরীক্ষা চালানোর পর নগদে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের তথ্য পাওয়ার কথা এক সেমিনারে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ডাক বিভাগের অনুমোদন ছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) কোম্পানিটির ইলেক্ট্রনিক মানি (ই মানি) তৈরি, সরকারি ভাতা বিতরণ না করে অর্থ সরানোর মত অনিয়মের বিষয় প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পুলিশ প্লাজায় মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ইকোসিস্টেম: ব্রিজিং দ্য গ্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন গভর্নর। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম ডিসকভার (উদঘাটন) করতে পেরেছি।’ খবর বিডিনিউজের।

অনিয়মগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নগদে অডিট চলছে। এরইমধ্যে আমরা খুঁজে পেয়েছি প্রকৃত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক মানি তৈরি করা হয়েছে। অতিরিক্ত ৬০০ কোটি টাকা তৈরি করা হয়েছে।’

মোবাইলে আর্থিক সেবা দেওয়া এ কোম্পানির বিরুদ্ধে ই মানি তৈরির অভিযোগের খবর এর আগেও সামনে এসেছিল। আগের সরকারের সময় এ নিয়ে আর্থিক খাতে আলোচনা চললেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব কোম্পানি সরকারের সুবিধা পেয়েছিল বলে আলোচনায় ছিল সেগুলোর মধ্যে নগদও ছিল।

সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া আহসান এইচ মনসুর ডিজিটাল লেনদেন সেবাদাতা এ কোম্পানি দেখভালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রশাসক বসান। পরে কোনো ‘অনিয়ম’ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ‘ফরেনসিক’ নিরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্তের কথাও জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো এমএফএস কোম্পানি গ্রাহকের নগদ আকারে জমা দেওয়া অথের্র সমপরিমাণ ইলেক্ট্রনিক অর্থ (ই মানি) তৈরি করতে পারবে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, কোনো গ্রাহক তার হিসাবে ১০০ টাকার ক্যাশইন করলে, সমপরিমাণ ১০০ টাকার ইলেক্ট্রনিক মানি তৈরি করতে পারবে কোনো এমএফএস কোম্পানি। বয়স্ক, উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার অর্থ বিতরণ না করে নগদ সেই অর্থ অন্যখানে সরিয়েছে বলেও জানান গভর্নর।

এমএফএস কোম্পানিটিকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সেখানে প্রশাসক বসানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নগদকে পুনর্গঠন করা হবে, এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তুলতে।’ কোম্পানিটিকে সক্রিয় করতে নতুন বিনিয়োগ আনার কথাও বলেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেনস্তার প্রতিবাদে নারী সমন্বয়কের সংবাদ সম্মেলন
পরবর্তী নিবন্ধমুখ্য সংগঠককে অবরুদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন