লোহাগাড়ার আধুনগরে হাতিয়ার খালের পাড়ে সড়ক রক্ষায় দেয়া বাঁধ এক বর্ষায় ধসে পড়েছে। ইউনিয়নের পাল পাড়া এলাকায় এই ধস দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ধসে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা না হলে বিলীন হয়ে যাবে চলাচলের রাস্তা।
জানা যায়, গত বর্ষার পূর্বে আধুনগর খাঁন হাট থেকে চুনতি হাজি রাস্তার মাথা এলাকা পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়ক প্রকল্পের আওতায় পাল পাড়া এলাকায় হাতিয়ার খালের পাড় ভাঙন রোধে বাঁধ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় খালে পাহাড়ি পানির ঢলে বস্তা দিয়ে দেয়া বাঁধ ধসে যায়। এছাড়া ভাঙন এলাকার আনুমানিক দেড় শতাধিক ফুট উজানে রয়েছে স্লুইচ গেট। বর্তমানে চাষাবাদের জন্য স্লুইচ গেট বন্ধ রেখে পানি জমানো হয়েছে। সামনে বর্ষার পূর্বে স্লুইচ গেটের পানি ছাড়া হলে স্রোতে ধসে যেতে পারে চলাচলের রাস্তা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়ার খালের পাড় রক্ষায় দেয়া বাঁধ ধসে যাওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে চলাচলের রাস্তা।
যার ফলে ওই স্থান দিয়ে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। খালের নিচে রিটেইনিং ওয়াল দিয়ে উপরে মাটি ভর্তি বস্তা বসানো হয়েছিল। খালের পাড় রক্ষায় দেয়া বাঁধের সিংহভাগ পানির স্রোতে ধসে গেছে। আগামী বর্ষার আগে ভাঙন এলাকা সংস্কার করা না হলে বিলীন হয়ে যেতে পারে চলাচলের রাস্তা। যেহেতু এলাকাবাসী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ রেলের যাত্রীরা যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে, তাই ওই সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় এক বছর যেতে না যেতেই হাতিয়ার খালের পাড় রক্ষায় দেয়া বাঁধ ধসে পড়েছে। আগামী বর্ষার আগে খালের পাড় রক্ষায় পুণরায় সংস্কার করা না হলে পানির স্রোতে চলাচলের রাস্তা ভেঙে যাবে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হবে স্থানীয়দের। এছাড়া ওই সড়ক দিয়েও যাতায়াত করা হয় লোহাগাড়া রেল স্টেশনে।
ঠিকাদার দিপু কান্তি পাল জানান, গত বর্ষার আগে পাল পাড়া এলাকায় হাতিয়ার খালের পাড় রক্ষায় মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় পানির স্রোতে বাঁধ ধসে পড়ে। বাঁধ টেকসই না হওয়ায় ওই কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বিল দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আল্লাহর ওয়াস্তে এই কাজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন জানান, আধুনগর পাল পাড়া এলাকায় বাঁধ ধসে চলাচলের রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে আগামী বর্ষায় বন্যার পানি দ্রুত লোকালয়ে ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হবে। তাই ধসে যাওয়া বাঁধ দ্রুত সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেছেন তিনি।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের (এলজিইডি) সার্ভেয়ার মো. মঈনুল ইসলাম জানান, আধুনগর খাঁন হাট থেকে চুনতি হাজি রাস্তার মাথা এলাকা পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কের ঠিকাদার পাল পাড়ায় হাতিয়ার খালের পাড় সড়ক রক্ষায় বস্তা দিয়ে বাঁধ দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বর্ষায় পানির স্রোতে বাঁধ ধসে যাওয়ায় ওই কাজের জন্য ঠিকাদারকে কোনো বিল দেয়া হয়নি। ওই স্থানে পুনরায় টেকসই বাঁধ দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পরিমাপ পাঠানো হয়েছে।