৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের গুজব ছড়ানো হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সেভাবে কোনো ঘটনা ঘটেনি মন্তব্য করে হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কুমার সরকার বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ গুজব ছড়িয়ে মূলত বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গতকাল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট–চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
বিজন কান্তি সরকার বলেন, ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী সময় থেকে শুরু করে পরবর্তী সময় পর্যন্ত সারাদেশে হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যেভাবে ভয় এবং আস্থাহীনতায় ভুগছেন সেটা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে চাই। চিন্ময়ের আন্দোলনের পেছনে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হাত ছিল উল্লেখ করে বিজন কান্তি সরকার বলেন, চট্টগ্রামে চিন্ময় হিন্দুদের দাবি দাওয়ার আন্দোলনের ডাক দিয়ে যেভাবে মাঠে নেমেছেন, এটির পেছনে আওয়ামী বিভিন্ন সংগঠন জড়িত ছিল। গোয়েদা সংস্থার লোকজন সেটি জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চিন্ময় কয়েকটি সমাবেশ ঘোষণা করলেও বেশিরভাগ সমাবেশ ফ্যাসিবাদের যেসব দোসর তাদের কমিটিতে ছিল, তারাই সব কর্মসূচি নির্ধারণ করে দিত। তাদের পুনর্বাসনের জন্য পাশের দেশ ইন্ধন যুগিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন বিজন সরকার।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে অনেক তথ্যই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের এই উপদেষ্টা বলেন, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে যে পরিমাণ নির্যাতনের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে তার সিকি ভাগও ঘটেনি। তারপরও মানুষ রাস্তায় নেমে মিছিল করেছে, প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু আমরা যখন সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলি, তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা শুনতে পাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, তাই তারাও মাঠে নেমেছেন।
হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কুমার সরকার বলেন, সংখ্যালঘুদের বদনাম ছিল তারা সবসময় আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টদের ভোট দেয়। আগে তারা আমাদেরকে পদায়ন করত না, কিন্তু গত কিছু সময় থেকে তারা প্রতিটা নিয়োগে হিন্দুদেরকে ভালো ভালো জায়গায় পদায়ন করেছে, শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন পাওয়ার জন্য। তাদের বুঝানোর জন্য যে, তারা সবসময় সংখ্যালঘুদের পাশে ছিল।
বাংলাদেশ হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমালের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক নেতা বিপ্লব পার্থের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. শরীফ উদ্দিন, সৎসঙ্গ চট্টগ্রাম বিভাগের সহ–সভাপতি অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দে, হিন্দু–বৌদ্ধ–কল্যাণ ফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগরের সহ–সভাপতি বাবু রঞ্জিত বড়ুয়া প্রমুখ।