নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : আধুনিক বাংলা কবিদের অন্যতম

| বুধবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (১৯২৪২০১৮)। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে আবির্ভূত আধুনিক বাংলা কবিদের অন্যতম। উলঙ্গ রাজাতাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থ লেখার জন্য তিনি ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। নীরেন্দ্রনাথের চক্রবর্তীর জন্ম ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ শে অক্টোবর তারিখে ফরিদপুর জেলার চান্দ্রা গ্রামে। তাঁর প্রাথমিক লেখাপড়া ফরিদপুরের পাঠশালায়। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে পাড়ি জমান কলকাতায়। কলকাতায় এসে প্রথমে কলকাতার বঙ্গবাসী স্কুলে এবং পরে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে ‘প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আই. . পাশ করেন। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট পলস্‌ কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে বি. . পাশ করেন। ছাত্রাবস্থায় ‘শ্রীহর্ষ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। মাত্র ৫ বছর বয়সে তিনি প্রথম কবিতা লেখার মধ্যদিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। কিন্তু সেটা কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। ১৬ বছর বয়সেই ‘শ্রীহর্ষ’ পত্রিকায় কবিতা লেখার মধ্যে দিয়েই সাহিত্যজগতে তাঁর প্রথম আত্মপ্রকাশ হয়। ‘দৈনিক প্রত্যহ’ পত্রিকায় তাঁর সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। ‘সত্যযুগ’ পত্রিকার সাংবাদিকরূপে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি একে একে ‘মাতৃভূমি’, ‘স্বরাজ’, ‘ভারত’, ‘ইউনাইটেড প্রেস অফ্‌ ইন্ডিয়া’ প্রভৃতি পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে যোগ দিয়েছিলেন ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায়। তিনি সম্পাদনা করেছেন শিশু কিশোর পত্রিকা ‘আনন্দমেলা’। তার হাত ধরেই বাংলা কিশোর সাহিত্য আরো বিকশিত ও সমৃদ্ধ হয়েছিলো। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে ‘শাদা বাঘ’ ‘বিবির ছড়া’ ‘নীল নির্জন’, ‘অন্ধকার বারান্দা’, ‘নীরক্ত করবী’, ‘নক্ষত্র জয়ের জন্য’, কলকাতার যিশু, খোলা মুঠি, কবিতার বদলে কবিতা, ‘আজ সকালে’ পাগলা ঘণ্টি’, ‘ঘর দুয়ার’, ‘সময় বড় কম’, ‘ঘুমিয়ে পড়ার আগে’, ‘দেখা হবে’। বাংলার কবিতা ও সাহিত্যে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর লেখা বেশকিছু ছোটগল্প ও উপন্যাস সাহিত্যপ্রেমীর কাছে কাছে চিরপ্রিয় হয়ে থাকবে। ‘ছন্দের ক্লাস’ ও ‘পিতৃপুরুষ’ নামে তার দুটি প্রবন্ধের বই রয়েছে। উলঙ্গ রাজা কাব্যগন্থের জন্য ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে উল্টোরথ পুরস্কার, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তারাশঙ্কর স্মৃতি, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ শিরোমণি পুরস্কার পান তিনি। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাকে ডক্টরেট প্রদান করে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধঔষধি উদ্ভিদ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক