সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর বিরুদ্ধে ‘অবৈধভাবে’ ৭৮ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন– দুদক।
দুদকের ঢাকা কার্যালয়ে হেনরীর বিরুদ্ধে গত রোববার সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ মামলা করেন। আরেক সহকারী পরিচালক শাহ আলম সেখ দুদকের পাবনা কার্যালয়ে গতকাল সোমবার হেনরীর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ দম্পতির ব্যাংক হিসাবে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্যও পেয়েছে দুদক। সেইসঙ্গে হেনরীর ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলার লেনদেনের তথ্যও রয়েছে এজাহারে। খবর বিডিনিউজের।
দুদক বলছে, ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন হেনরী। তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা। এজাহারে অভিযোগ, হেনরী ‘অবৈধভাবে’ অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তির উৎস গোপন করতে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭৭ টাকা ও ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। আর হেনরীর ‘অপরাধলব্ধ অর্থ’ থেকে ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদের মালিক হয়েছেন শামীম। তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হেনরীর বিরুদ্ধে গত ২০ অগাস্ট দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। এরপর গত ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার থেকে স্বামীসহ তিনি গ্রেপ্তার হন। দুদকের আবেদনে গত ২৫ নভেম্বর হেনরী, তার স্বামী ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে আসা হেনরী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ–২ আসনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন। ২০০৮ সালে সিরাজগঞ্জের সবুজ কানন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থেকে সরাসরি সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। যদিও সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হেনরী সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন। সেসময় ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং অন্যান্য ঘটনায় তার নাম আলোচনায় আসে। হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে দুদক।