বৈশ্বিক টেকসই প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা সূচকে (গ্লোবাল সাস্টেনেবল কম্পেটিটিভনেস ইনডেক্স–জিএসসিআই) বাংলাদেশ ১৪ ধাপ এগিয়েছে। ১৯১ দেশের মধ্যে অবস্থান এখন ১১৬তম। চলতি বছর এ সূচকে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০ দশমিক ৫৫ স্কোর নিয়ে ১৪ ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে ৩৯ দশমিক ৬ স্কোর নিয়ে ১৮০ দেশের মধ্যে অবস্থান ছিল ১৩০তম। ৬১ দশমিক ২২ স্কোর নিয়ে আগেরবারের মতো এবারও তালিকার শীর্ষে রয়েছে সুইডেন; যেখানে ৩০ দশমিক ৭৫ স্কোর নিয়ে তলানিতে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। খবর বিডিনিউজের।
জিএসসি সূচকের মাধ্যমে একটি দেশের টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা তুলে ধরা হয়। ২০১২ সাল থেকে এই সূচক প্রকাশ করছে সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সোলাবিলিটি। সূচক তৈরি করতে গিয়ে একটি দেশের ১৯০টি পরিমাণগত (কোয়ান্টিটেটিভ) মানদণ্ড বিবেচনায় নেওয়া হয়। এরপর ১৯০টি মানদণ্ডকে ছয়টি দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাগ করে চূড়ান্ত সূচক তৈরি করে সোলাবিলিটি।
ছয়টির মধ্যে ন্যাচারাল ক্যাপিটাল সূচকে একটি দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের অবস্থা তুলে ধরা হয়। এই সূচকে ৫৯ দশমিক ৮৬ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে নেপাল। এতে ৩৮ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯। গত বছর ৪২ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে অবস্থান ছিল ৯৮তম।
রিসোর্স ইফিসিয়েন্সি সূচকে তুলে ধরা হয় একটি দেশের মাথাপিছু ও অর্থনৈতিক উৎপাদনে ব্যয় হওয়া সম্পদের পরিমাণ। এ সূচকে সবচেয়ে বেশি নম্বর রয়েছে বাংলাদেশের। ৫০ দশমিক ৮৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৫তম। ২০২৩ সালে অবস্থান ছিল ৯২তম।
বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জিএসসি সূচক তৈরি করা হয়। নিজেদের টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা মূল্যায়ন করতে চারটি দেশ সরকারিভাবে এই সূচক ব্যবহার করে। ছয়টি সূচকের মধ্যে সোশাল ক্যাপিটালে মূলত একটি দেশের সামাজিক সংহতি, স্বাস্থ্যসেবা, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমতার চিত্র প্রতিফলিত হয়। এ সূচকে ৪৪ দশমিক ৯১ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে ৬৬তম অবস্থানে, যা আগেরবার ছিল ৯৩তম। এ সূচকে ৬৪ দশমিক ৯৯ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে জাপান।
শিক্ষা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা তুলে ধরা হয় ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনোভেশন সূচকের ভিত্তিতে। এতে বাংলাদেশের স্কোর সবচেয়ে কম, ২৬ দশমিক ২৮; তালিকায় অবস্থান ১৪৭তম। ৭৭ দশমিক ৮৬ স্কোর নিয়ে সবার উপরে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
জিএসসি সূচক একটা দেশের জিডিপির বিকল্প মানদণ্ড হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এতে একটা দেশে ব্যবসা কিংবা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক ঝুঁকি থেকে শুরু করে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অগ্রগতি প্রতিফলিত হয়। প্রতিবেদনে একটা দেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের কাঠামো ও গতিশীলতা তুলে ধরা হয় ইকোনমিক সাস্টেনবিলিটি সূচকে। এ সূচকে ৪০ দশমিক ১৬ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। আগেরবার ছিল ১১২তম। এবার সর্বোচ্চ স্কোর অস্ট্রিয়ার; ৬০ দশমিক ২২।
গভর্নেন্স পারফরম্যান্স সূচকে দেখা হয় অবকাঠামো, সম্পদের বণ্টন, দুর্নীতি ও রাজস্ব আহরণের হার। এ সূচকে ১৩২তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের স্কোর ৪২ দশমিক ৪৩। ২০২৩ সালে অবশ্য বাংলাদেশ এ সূচকে এগিয়ে ছিল। ৫৭ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে অবস্থান ছিল ৫৪তম।