অসাধারণ অগ্রগতির জন্য সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ডকে পেছনে ফেলে ইকনোমিস্টের বর্ষসেরা দেশের খেতাব পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতি বছরের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ এ সংবাদমাধ্যম ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে। কোনো দেশের সম্পদ, সুখ বা গুণাবলীর ওপর ভিত্তি করে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। ফেলে আসা এক বছরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনকারী দেশকে বর্ষসেরার খেতাব দেওয়া হয়।
ইকনোমিস্ট বলছে, তাদের সংবাদদাতাদের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে এবার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে রানারআপ হয়েছে সিরিয়া। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশকে বর্ষসেরার স্বীকৃতি দিয়ে দ্য ইকনোমিস্ট লিখেছে, আমাদের বিজয়ী বাংলাদেশ, যে দেশ একজন স্বৈরাচারীকে উৎখাত করেছে। গত আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে রাজপথে বিক্ষোভের মুখে ১৫ বছর ধরে সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের দেশ শাসন করা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। স্বাধীনতার নায়কের এই কন্যা একসময় দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেন। কিন্তু তিনিই হয়ে উঠেন নিপীড়ক, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের জেলে পাঠান এবং বিক্ষোভকারীদের গুলি করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। তার নজর ছিল বিপুল পরিমাণ অর্থে। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে প্রতিহিংসামূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে মন্তব্য করে পত্রিকাটি লিখেছে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। ইসলামি চরমপন্থা একটি হুমকি। তবুও পটপরিবর্তনটি এখন পর্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। শিক্ষার্থী, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজ সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। এই সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে, সেই সঙ্গে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ইকনোমিস্ট লিখেছে, ২০২৫ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে হবে বাংলাদেশকে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে আদালতের নিরপেক্ষতা এবং বিরোধীদের সংগঠিত হওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনোটিই সহজ হবে না। কিন্তু একজন স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়ে অধিকতর উদার সরকারের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য বাংলাদেশ আমাদের কাছে এ বছরের সেরা দেশ।