রাঙ্গুনিয়া শিলক খালের মুখ এলাকায় তৈরি করা রাবার ড্যামের রাবার রাতের আঁধারে কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদের জন্য ধরে রাখা পানি নিচের দিকে প্রবাহিত হয়ে সরে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। গত সোমবার রাতে কে বা কারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই রাবার ড্যাম কেটে দেয়। এই ব্যাপারে থানায় ও উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় উপকারভোগী কৃষকরা। কৃষি অফিস বলছে, কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য জরুরি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিলক খালের মুখ এলাকায় ২০০৭ সালে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এক সময় শিলক ও পদুয়া ইউনিয়নে তৈলাভাঙা বিল, নারিশ্চা বিলসহ শতশত হেক্টর জমি শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদী পড়ে থাকত। রাবার ড্যামের কারণে এসব বিল এখন আবাদের আওতায় এসেছে। কিন্তু এবার রাবার ড্যামের রাবার কেটে দেয়ার ফলে কৃষকদের চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, এলাকার ৫ হাজার কৃষক শিলক খালের পানি সেচের ওপর নির্ভরশীল। এই এলাকার প্রায় ৪০ হাজার কৃষকের জীবন–জীবিকা চলে চাষাবাদে। রাবার ড্যামের রাবার কেটে দিয়ে নষ্ট করে দেয়া মানে কৃষকদের সাথে শক্রতা।
কৃষক শামসুল আলম বলেন, এ মৌসুমের জন্য ৩০০ কেজি ধান বীজ লাগিয়েছি। পানির সমস্যা হলে আমার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। স্থানীয় কৃষক হান্নান সিকদার, মো. আলী, মো. আবদুল মান্নান, এনাম চৌধুরী, বাবর তালুকদারসহ অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত রাবার ড্যাম দ্রুত মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চান। স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আজিম বলেন, রাবার ড্যাম ক্ষতি হওয়ার কারণে কৃষকদের চাষাবাদে অসুবিধা হবে।
কৃষকদের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রকৌশলী ও থানায় অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় শাহজাহান সিকদার। তিনি বলেন, কৃষকদের স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও থানায় জানিয়েছি। দেখি তারা কী উদ্যোগ নেন। এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, রাবার ড্যাম প্রকৌশল অফিস দেখে। কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টরা দপ্তরে আমরা যোগাযোগ করেছি। যাতে এটির দ্রুত সমাধান হয়।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম বলেন, র্যাবার ড্যাম একটি সমিতির অধীনে চলে। ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট লোকজন যোগাযোগ করে ড্যামের ক্ষতির বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এটি যাতে মেরামত হয় সেই চেষ্টা চলছে।