জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এক ঘোষণায় পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের (টমটম) লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিলো। কিন্তু ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি পৌরসভা। ফলে এই সুযোগে গ্রাম–গঞ্জ থেকে এই ব্যস্ততম শহরে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারি রিকশা। এতে পুরো শহর ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশায় সয়লাব হয়ে যায়। এতে ভেঙে পড়েছে পর্যটন নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা।
সম্প্রতি পর্যটন মৌসুম শুরু হলে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা। বর্তমানে মাত্রাতিরিক্ত ইজিবাইকসহ বহুমুখী যানবাহনের চাপে দুর্ভোগের নগরীতে পরিণত হয়েছে শহরটি। এতে পর্যটক ও স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। যানবাহনের এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এটিকে ইস্যু বানিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে চালকরা।
সংশ্লিষ্টদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিংক রোড, কক্সবাজার শহর ও পর্যটন জোন কলাতলী ঘিরে বর্তমানে ১০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল করছে। কিন্তু পৌরসভার পরিসংখ্যান মতে, ধারণ ক্ষমতা তিন হাজারের কম। এসব ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা রাতদিন অনিয়ন্ত্রিতভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সবখানে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে থাকছে তীব্র যানজট। পুরো কলাতলী, শহরের প্রধান সড়ক ও মেরিন ড্রাইভ সড়কের দীর্ঘস্থানে এই কাহিল অবস্থা বিরাজ করছে। এর প্রভাব পড়ছে মহাসড়ক, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, লিংকরোড ও রামু স্টেশন এলাকায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিদিন বেলা ১১টার পর থেকে রাত পর্যন্ত কক্সবাজার শহর এবং দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত কলাতলীতে যানজট বিরাজ করছে। যানবাহনের এই চাপ সামলাতে কলাতলী ডলফিন মোড়সহ একাধিক পয়েন্টে ডিভাইডার দিয়ে সড়ক ব্লক করেছে ট্রাফিক পুলিশ। তারপরও সমাধান মিলছে না। এতে দীর্ঘ উল্টোপথ ঘুরে আসতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। তাই বাধ্য হয়ে পর্যটকসহ অনেকে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার লাইসেন্স শাখা ইনচার্জ প্রমথ পাল জানান, নতুন করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না। প্রক্রিয়াটি এখনো শেষ করা যায়নি। শেষ হলে অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসীম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যানজট রোধে রাত সাড়ে ৯টার আগে কোনো বাস শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নিবন্ধনের ভিত্তিতে কিছু বাস শহরের নির্দিষ্ট স্থানে পার্কিং করছে। ত্রিমুখী চাপ সামলাতে ডলফিন মোড়ে ডিভাইডার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মোড়ে মোড়ে মোতায়েন রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। একই সাথে অবৈধ ইজিবাইক জব্দ করা হচ্ছে। তবে পর্যটন মৌসুম হওয়ায় তারপরও যানবাহনের চাপ রয়েছে।












