পটিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী যুবকের ছুরিকাঘাতে শিউলী বেগম (৪২) নামের এক গৃহবধূ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত শিউলী উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজ গাজী বাড়ির মুহাম্মদ মুছার স্ত্রী। অন্যদিকে ঘাতক আলফাজুর রহমান ইয়াছিন আলভি (১৮) একই এলাকার বাচা মিয়ার ছেলে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুই কিশোরের ব্যাডমিন্টনের ব্যাট নিয়ে সৃষ্ট ঝগড়া থেকে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিউলী বেগম ১ মেয়ে ও ৩ ছেলে সন্তানের জননী। তার এক ছেলে শামিমের (১২) সঙ্গে ব্যাডমিন্টনের ব্যাট নিয়ে প্রতিবেশী বাচা মিয়ার ছেলে তাহসিনের (১৪) ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তাহসিন শামিমকে পাথর ছুঁড়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ নিয়ে শামিমের মা শিউলী তাহসিনের মাকে ডেকে বিচার দেন এবং ছেলের চিকিৎসার খরচ দিতে বলেন। কিন্তু তাহসিনের মা তাতে রাজি না হয়ে ওল্টো গালমন্দ করতে থাকেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রক্তাক্ত শামিমকে নিয়ে মা শিউলী ও বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তারা হাসপাতাল থেকে ফিরলে তাহসিনের বড়ভাই আলফাজুর রহমান ইয়াছিন আলভিসহ পরিবারের লোকজন শিউলী বেগম ও তার ঘরে হামলা করে। এসময় তারা রান্না ঘরের চুলাসহ যাবতীয় জিনিসপত্র তছনছ করে দেয়। একপর্যায়ের তাহসিনের বড়ভাই আলভি শামিমের মা শিউলীকে পেটে ছুরিকাঘাত করে বসে। ছুরিকাঘাতের পর শিউলী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাহসিনের পরিবারের অন্যান্য লোকজন রক্তাক্ত শিউলীকে লাথি মারতে থাকে এবং তার কানের দুলটিও খুলে নেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় আরেকটি সূত্র জানায়, আগে থেকে দুই পরিবারের মধ্যে রান্না ঘরের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
স্থানীয়রা জানান, ঘাতক যুবক আলভি বখাটে প্রকৃতির। সে সবসময় পটিয়ার এক চিহ্নিত সন্ত্রাসীর অনুসারী পরিচয় দিয়ে এলাকায় আস্ফালন করতো। যার কারণে তার সাথে কেউ প্রতিবাদ করে কথা বলতেও সাহস করত না।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত আলভি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। ঘটনার ব্যাপারে নিহতের পরিবারকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেয়া হবে।