দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয় পেল চট্টগ্রাম বিভাগ

তামিম ঝড়ের পর নাঈম আর হাসান মুরাদের ঘূর্ণি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

প্রথম ম্যাচে বিবর্ণ ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে এসে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তার ব্যাটিং তাণ্ডবের পর দুই স্পিনার হাসান মুরাদ এবং নাঈম হাসানের ঘূর্ণির সুবাদে এনসিএল টিটোয়েন্টির দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয় তুলে নিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল। গতকাল সিলেট আউটার স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল ১২ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক সিলেট বিভাগীয় দলকে। সিলেটের পক্ষে চেষ্টা করেছিলেন তৌফিক খান। কিন্তু পারলেন না। নাঈম হাসানের বলে ডিপ মিড উইকেট ডানে ঝাঁপিয়ে তৌফিক খানের দারুণ ক্যাচ নিলেন হাসান মুরাদ। জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তৌফিকের বিদায়ে স্বস্তি ফিরল চট্টগ্রাম দলে। পরে সহজেই বাকি কাজটুকু সেরে নিল তারা।

কুয়াশার কারণে ১৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে দারুণ শুরুর পরও ৯ উইকেটে ১৪৫ রানে থেমে যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। জবাবে তৌফিক ছাড়া আর কেউই দায়িত্ব নিতে না পারায় ৪ বল বাকি থাকতে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট। দুই ম্যাচে চট্টগ্রামের এটি প্রথম জয়। সিলেট হারল দুই ম্যাচেই। প্রায় সাত মাস পর মাঠে ফেরা তামিম প্রথম ম্যাচে বুধবার ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হয়ে যান। তবে পরেরটিতেই তিনি মেলে ধরলেন সেরা সময়ের প্রতিচ্ছবি। ৮ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৩৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টস হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রামের ইনিংসে ছিল পরিষ্কার দুটি ভাগ। প্রথম ৮ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তারা করে ৯৮ রান। পরে বাকি ৭ ওভারে আরও ৮ উইকেটে তাদের স্কোরে যোগ হয় মাত্র ৪৭ রান। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চমৎকার শুরু এনে দেন মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম। প্রথম ওভারেই ছক্কা ও চার মারেন জয়। পরের সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে কাভার ড্রাইভে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেন তামিম। আবু জায়েদ চৌধুরির বলে দুই চারের সঙ্গে ছক্কা মারেন জয়। ইবাদত হোসেন চৌধুরির ওভারে তামিম মারেন তিনটি চার। এরপর জয়কে দর্শক বানিয়ে এগিয়ে যান তামিম। আবু জায়েদের ওভারে দুটি চারের পর নাঈম আহমেদের বলে মারেন ছক্কা ও চার। ১৭ বলে ২৯ রান করা জয়কে সপ্তম ওভারে ফেরান ইবাদত। ৮০ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এটি টিটোয়েন্টিতে তামিমের পঞ্চাশতম হাফ সেঞ্চুরি। মাহফুজুর রহমান রাব্বির পরের দুই বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে তিনি ওড়ান ছক্কায়। দলের একশ পার হওয়ার পর তোফায়েল আহমেদের বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় ফেরেন তামিম। এরপর বাকিদের ব্যর্থতায় কাঙ্খিত গতি পায়নি চট্টগ্রামের ইনিংস। পরে সাব্বির ছাড়া আর কোন ব্যাটারই দুই অংকের ঘরে যেতে পারেনি।

জবাবে ব্যাট করতে নামা সিলেট বিপাকে পড়ে যায় দ্রুতই। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা জিসান আলম, অমিত হাসান ও আসাদুল্লাহ আল গালিব। তৃতীয় উইকেটে ওয়াসিফ আকবরকে নিয়ে ৪২ বলে ৭৯ রান যোগ করেন তৌফিক। যেখানে ওয়াসিফের অবদান ১৭ বলে ১৩ রান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে যাত্রা শুরু করেন তৌফিক। তৃতীয় ওভারে হাসান মুরাদের বলে চারের পর মারেন দুটি ছক্কা। পরের ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে চার ও ছক্কা। পঞ্চম ওভারে আহমেদ শরিফের বলে ছক্কা ও চারে মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করেন তিনি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি আছে শুধু শুভাগত হোম (১৬ বল) ও লিটন কুমার দাসের (১৮ বল)। ১১তম ওভারে এই উইকেটরক্ষকব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে চট্টগ্রামের জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন নাঈম। পরে বাকি কাজ সারতে বেগ পেতে হয়নি শরিফ, ইফরানদের। ৭৬ রান করেন তৌফিক খান। দলের আর দুজন ব্যাটার কেবল দুই অংকের ঘরে যেতে পেরেছে। তারা হলেন ১৩ রান করা ওয়াসিফ এবং ১৪ রান করা তোয়ায়েল। চট্টগ্রামের পক্ষে ১৭ রানে তিনটি উইকেট নেন নাঈম হাসান। আর ২৫ রানে ৩টি উইকেট নেন হাসান মুরাদ। ২টি উইকেট নিয়েছেন আহমেদ শরীফ। দুর্দান্ত ব্যাটিং এর জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তামিম ইকবাল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথম সিনেমার আগেই দ্বিতীয় সিনেমা নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে মেহজাবীন