ট্রাম্প ও বাইডেনের ক্ষমতার পালা বদল : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

কানাই দাশ | বুধবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

দ্বিদলীয় গণতন্ত্রের দীর্ঘ দিনের দৃষ্টান্ত বিশ্বের এক নম্বর অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রত্যাশিত ভাবেই ট্রাম্প বিপুল বিক্রমে ক্ষমতার ফিরে আসল। ব্যক্তিগত জীবনে ট্রাম্পের মত নীতিহীন চরম বর্ণবাদী একজন লোকের যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনর্নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথিত সভ্য সমাজ মানসের চূড়ান্ত অনৈতিক অধোগতির প্রমাণ যদিও মার্কিন শাসক গোষ্ঠীর অন্দর মহলের নীতি নির্ধারকদের মানবিক নীতি নৈতিকতা কোনদিন ছিল না। তবুও ইউক্রেন, ইরান, চীন, গাজা ও দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই ট্রাম্পের উপর নিরুপায় ভরসা রাখতে শুরু করেছেন। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে বিদ্যমান সমাজতন্ত্রের পতনের পর ‘ওয়ারশ সমাজতান্ত্রিক যুদ্ধ জোট’ তাঁর প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে বিলুপ্ত হয়। ফলে ১৯৪৯ সালে পশ্চিম ইউরোপে দেশগুলোকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত যুদ্ধজোট ‘ন্যাটে’র অবলুপ্তি ছিল স্বাভাবিক কেন না খোদ রাশিয়ায় বা ইউরোপের সর্বত্রই পশ্চিমা আর্থরাজনৈতিক মতাদর্শ তথা অবাধ পুঁজিবাদী ব্যবস্থা চালু হয়। কিন্তু ১৯৯০ পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে ন্যাটোর রুশ সীমান্তমুখী পূর্ব বা উত্তরমুখী সম্প্রসারণ না করার রাশিয়াকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি থেকে কিছুদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সরে আসে। ইতোমধ্যে পশ্চিম ইউরোপের জনমানসেও ন্যাটোর মত যুদ্ধজোট টিকিয়ে রাখা, পশ্চিম ইউরোপে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিরোধিতা শুরু হয়। এই আবহে অন্য দেশের অপছন্দের শাসক পরিবর্তনে পারদর্শী যুক্তরাষ্ট্র আভ্যন্তরীণ আর্থরাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে ইউক্রেনের রাশিয়ার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ইয়ানুকোভিচ সরকারের পতন ঘটিয়ে মার্কিন অনুগত একজন কমিক অভিনেতা জেলেনস্কিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে এবং ইউক্রেনকে ন্যাটো তে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। ইউক্রেনের সাথে ইতোপূর্বে সাক্ষরিত ‘মিনস্ক’ চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানায়। মার্কিন মদদে কিয়েভ সরকার পূর্ব ইউক্রেনের রুশভাষী নাগরিকদের উপর নিপীড়ন না করার রুশ পরামর্শ ক্রমাগত অগ্রাহ্য করার পটভূমিতে রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দ্বীপ দখল করে নেয়। ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যখন মার্কিনী চাপে ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলে তখন নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে রাশিয়া ২০২২ সালে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করতে ব্যধ্য হয়। সেই যুদ্ধ এখনো চলমান। ন্যাটো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সর্বাত্মক সামরিক, আর্থিক, কূটনৈতিক সহায়তা নিয়ে ইউক্রেনের হয়ে মূলত রাশিয়ার সাথে প্রক্সি ওয়ার চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ইউরোপের ন্যাটো বর্হিভূত নিরপেক্ষ দেশগুলো সুইডেন, নরওয়ে ফিলন্যান্ড প্রভৃতি দেশের শাসক গোষ্ঠী রুশভীতিতে আতংকিত ও মার্কিনী সাহায্যে প্রলুব্ধ হয়ে ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে ফলে পশ্চিম ইউরোপের একটি আঞ্চলিক জোট থেকে ন্যাটো এখন কার্যত মহাদেশীয় যুদ্ধ জোট তথা কন্টিনেন্টাল মিলিটারি এ্যালায়েন্সের রূপ নিয়েছে। ফলে ইউক্রেনের মাটিতে চলমান মূলত ন্যাটোরুশ যুদ্ধ একটি দীর্ঘ আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে মোড় নিয়েছে। অত্যাধুনিক মার্কিন মারণাস্ত্র হাতে ইউক্রেনীয় সেনাদের জোর প্রত্যাঘাত সত্ত্বে ও রুশ হামলায় তিন বছরের ও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু গাজালেবাননে ইসরাইলি হামলা ও হত্যার তুলনায় একেবারে নগন্য। ইউক্রেন যুদ্ধে অঢেল মার্কিন সহায়তার ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে শুরু হওয়া তীব্র মন্দা ও সংকট বাইডেন ও ডেমোক্র্যাটদের শোচনীয় নির্বাচনী পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। শেষপর্যন্ত বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে বাইডেন রাশিয়ার গভীরে হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে যুদ্ধকে তীব্রতর ও বিস্তৃত করতে যুদ্ধপরাধমূলক পদক্ষেপ নিলেন। বাধ্য হয়ে রাশিয়াও প্রথমবারের মত আন্ত মহাদেশীয় ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করল ইউক্রেনে। রাশিয়ার অগ্রিম হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও বাইডেনের এই পদক্ষেপ পুরো পৃথিবীকে একটি তাপ পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধবাজ রাজনীতির ফলে দেশ হিসাবে ইউক্রেন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর এই সংঘাতের পরিপূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শিল্প কমপ্লেক্সের মালিকরা। পুরো ইউরোপ এখন মার্কিন অস্ত্রের রমরমা বাজার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এত অস্ত্র উৎপাদন ও মুনাকা মার্কিন ওয়ার কমপ্লেক্সের মালিকরা করতে পারেনি। ‘ডেমোক্র্যাট’ বাইডেন এই কৃতিত্বের দাবীদার।

বস্তুত মার্কিন রাজনীতিতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান তথা হাতি আর গাধার নির্বাচনী লড়াই এর আদলে চার বছর পর পর দুই আদর্শিক মিত্রের নির্বাচনী সার্কাস চলে। মনে রাখতে হবে ভিয়েতনাম যুদ্ধ তীব্রতর ও সম্প্রসারণ করেছিল সবচেয়ে ‘উদারবাদী’ ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। জনসন ও রিপাবলিকান নিক্সন তা হিংস্রভাবে অব্যাহত রাখে। ’৭১ সালে বাংলাদেশে নজিরবিহীন গণহত্যার মূল সমর্থক ছিলেন নিক্সনকিসিঞ্জার রিপাবলিকান জুটি। আমাদের দেশের মানুষের মত পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ মার্কিনীদের বিশ্ব পুলিশি ভূমিকায় বিরক্ত ও নিপীড়িত হয়ে প্রত্যেকবারই মার্কিন রাষ্ট্রপতি হিসাবে নতুন মুখ দেখলে আশান্বিত হয়ে উঠেন কিন্তু অল্প দিন পরই স্বপ্নভঙ্গের পালা শুরু হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই হবে না। বাইডেনের অপকর্মে বিদ্বিষ্ট ও হতাশ হয়ে আমাদের দেশের অনেকেই ট্রাম্পের বিজয়ে খুশি হয়েছেন বলে মনে হয় কিন্তু তাঁদের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই হতাশ হতে হবে। ব্যক্তি জীবন ও নৈতিক মানদণ্ডে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একজন নিকৃষ্টতম প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর প্রথম মেয়াদেই প্রমাণ রেখেছেন। কোন নীতিহীন মুনাফা লোভী কর্পোরেট পুঁজির মালিক ও শাসক মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কিছুই করতে পারে না। মূলত কথিত মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থাটিই একটি দ্বিদলীয় প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী হিসাবে গত দুইশ বছর ধরে চলছে। তৃতীয় কোন শক্তির উত্থান নানা প্রক্রিয়ায় দুই দলের সম্মিলিত নিখুঁত ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অতিকায় সব কর্পোরেট হাউজ এই দুই দলের চাঁদাদাতা, কৌশল ও ব্যবস্থাপত্র প্রণেতা। ট্রাম্প নিজেই একজন মার্কিন ধনকুবের ও বিশাল রিয়েল এষ্টেট কর্পোরেশনের মালিক। ব্যক্তিগত জীবনে বেপরোয়া, ব্যভিচারী ও অসৎ জীবন যাপনে আজীবন অভ্যস্ত ট্রাম্প সমকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট, আইজেনআওয়ার, কেনেডি, এমনকি ওবামা প্রমুখের তুলনায় মানবিক মূল্যবোধ, চিন্তা ভাবনার নিরিখে বস্তুত একেবরেই বামন, বিসদৃশ ও বেমানান। পূর্বেই বলেছি ক্রমাবনতিশীল আগ্রাসী মার্কিন রাজনৈতিক অর্থনীতি ও কর্পোরেট হাউজগুলোর বর্ণবাদী একাধিপত্য, শ্বেতাঙ্গ অভিবাসীর মিশ্র সংস্কৃতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ও মানুষকে বিকৃত ও বিদ্বিষ্ট করে ফেলেছে। ট্রাম্প এই নষ্ট সমাজের নষ্ট প্রতিভু। ইরান, ইসরাইল ও প্যালেস্টাইন প্রশ্নে, জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষা তথা জলবায়ু সমস্যার প্রশ্নে ট্রাম্প একেবারেই প্রতিকূল অবস্থানে। দেশে দেশে সাম্প্রদায়িক সহমর্মিতা, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রশ্নে বর্ণবাদী ট্রাম্প উদার, দৃঢ় ও সহনশীল হবার প্রশ্নই আসে না। কেননা মার্কিনী স্বার্থের উগ্র জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি সব কিছুই বিচার করে থাকেন। তাঁর নির্বাচনী স্লোগান ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ এর নামে তিনি মূলত বিশ্বব্যাপী মার্কিনি আধিপত্য ও লুটেরা অর্থনীতিকে মার্কিনী ধনকুবেরদের জন্য নির্বিঘ্ন করতে চান।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে আজ পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক শতাব্দীরও বেশি সময়ে চিলি থেকে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান থেকে পানামা পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশ সমূহে রাজনীতিতে যত ক্যু, হত্যা, নিপীড়ন, নির্যাতন, বিধ্বংসী স্থানীয় যুদ্ধ, ক্ষমতার রক্তাক্ত পরিবর্তন হয়েছে, অর্থনীতিতে অবাধ লুণ্ঠন চলেছে, সামাজিকভাবে ধর্মান্ধতা ও অপসংস্কৃতির বিস্তৃতি ও ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার চলেছেতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে দায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অপসংস্কৃতি, অপরাজনীতি, মুক্ত বাজার ব্যবস্থার নামে এসব দেশে রাজনীতি ও অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন সংঘটিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইঙ্গিতে ও অভিপ্রায়ে। প্রকৃত অর্থেই বিশ্ব মানবতার দুশমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে মোহ, তার কথিত শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে শ্রদ্ধাবোধ মানবদরদী যে কোন ব্যক্তির থাকার তো প্রশ্নই আসে না বরং তা পোষণ করা এক ধরনের মানসিক বিকার ও অসুস্থ রুচির পরিচয় বলে আমার মনে হয়। এজন্য কারো বামপন্থী হবার প্রয়োজন পড়ে না। ব্রাটান্ড রাসেল, রোমা রোঁলার মত না হলেও কিছুটা মানবিক হলেই চলে। ইউরোপীয় রেনেসাঁর মানবিক আলোয় দুইতিন শতাব্দী ধরে ইতালি, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডে যে রাজনীতি, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ গড়ে উঠে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে জীবন ও জীবিকার সন্ধানে ষষ্ঠ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে ছুটে যাওয়া লুম্পেন কিছু শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা অধিকৃত ও পরবর্তীতে বৃটেনের উপনিবেশ, আফ্রিকা থেকে ধরে নিযে যাওয়া কালো ক্রীতদাসদের বিনা মজুরির, শ্রমে রক্তে গড়ে উঠা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সুনির্দিষ্ট সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি বরং ঔপনিবেশিকায়নের প্রাক্কালে অষ্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের মত নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে পশ্চিম গোলার্ধের মায়া ও আজটেক সভ্যতার ধারক রেড ইন্ডিয়ানদের। ঔপনিবেশিক ভাষা ইংরেজি হয়ে গেছে সে দেশের ভাষা যেমন করে দক্ষিণ আমেরিকায় জায়গা করে নিয়েছে স্প্যানিশ ভাষা। শাসক গোষ্ঠীর স্বার্থে গড়ে উঠেছে এক দ্বিদলীয় কথিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। যে কোনো বিকল্প সম্ভাবনাকে সে খানে দুই দল মিলে নিষ্ঠুর ভাবে দমন করে ফেলে।

মানবতার শত্রু সাম্রাজ্যবাদী এই দানবের বিশ্বব্যাপী এই আগ্রাসন সোভিয়েত রাশিয়ার মত বিকল্পহীন আজকের পৃথিবীতে প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো দেশে দেশে সকল বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তির সচেতন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম জোরদার করা। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে সে সংগ্রাম জোরদার হয়েছিল এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী শাসনামলে ভিয়েতনামে মার্কিন হামলার প্রতিবাদে এদেশে রাজপথে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মিদের প্রথম রক্ত ঝরেছিল। মানবিক বৈষ্যমের বিরুদ্ধে এ ছিল ছাত্রদের প্রথম আত্মত্যাগ। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রই নানা চক্রান্ত করে দেশকে ভিন্ন পথে নিয়ে যায়। তাদের জন্যই দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দেশে নানা অপশক্তির শাসন ও প্রভাব চলছে। তাদের উপদেশ অনুযায়ী চালু নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক শাসন ব্যবস্থা ও লুণ্ঠন আজকের আমাদের সংকটের মূল উৎস। আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের কথা বলছি অহরহ কিন্তু এর উৎস মার্কিনি মডেলের লুটেরা অর্থব্যবস্থার বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। এই ব্যবস্থা বজায় রেখে কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। সাম্রাজ্যবাদী শাসন শোষণ বিরোধী এই সংগ্রাম পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এই সংগ্রামের মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানুষের আর্থিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি, সাম্প্রদায়িক, ধর্মীয় বৈষ্যম্য বিরোধী সংগ্রামপ্রকৃত সামাজিক মুক্তির আন্দোলন।

লেখক: কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধনতুন প্রজন্মের বিজয়