বাড়িভাড়ার ওপর গৃহকর মূল্যায়ন বাতিলের দাবি

মেয়রকে সুরক্ষা পরিষদের স্মারকলিপি, ৫ দফা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ

বাড়িভাড়া নয়, আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের দাবিতে চট্টগ্রাম সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহম্মদ আমির উদ্দিনের নেতৃত্বে গত ৯ ডিসেম্বর সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে সুরক্ষা পরিষদ পাঁচ দফা দাবি পেশ করে বলে, ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের সময়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারি করা দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস ১৯৮৬ অনুবলে বাড়িভাড়ার ওপর গৃহকর নির্ধারণ করায় গৃহকর হঠাৎ লাফিয়ে ৮/১০ গুণ বৃদ্ধি পায়। এতে নগরবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। নগর ভবন ঘেরাও করলে তৎকালীন মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বাড়িবাড়ার ওপর কর নির্ধারণী প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পূর্বের নিয়মে অর্থাৎ বর্গফুটের ওপর কর নেওয়া অব্যাহত রেখে সমস্যা সুরাহা করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ এ নিয়ম চলে এলেও মনজুর আলমের সময় পুনরায় ৮৬ রুলস অনুসারে গৃহকর বৃদ্ধি করা হলে উত্তেজনা শুরু হয়। মেয়র মনজুর তা কমিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। পরে মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীন ২০১৬ সালে ৮৬ সালের রুলসের অজুহাত দেখিয়ে বাড়িভাড়ার ওপর গৃহকর মূল্যায়ন করে গৃহকর আদায়ের উদ্যোগ নিলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে চট্টগ্রাম সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন গড়ে তোলেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, মিছিলমিটিং, জনসভা, ওয়ার্ড অভিযাত্রা এবং নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়। এতে বাড়িভাড়ার ওপর করা গৃহকর মূল্যায়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, রেজাউল করিম মেয়র হওয়ার পর বাড়িভাড়ার ওপর গৃহকর আদায়ে তোড়জোড় শুরু করলে সুরক্ষা পরিষদ আন্দোলন গড়ে তোলে। বর্তমান মেয়র নিজেও এ আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে মিটিংমিছিল করেছিলেন। তাই চট্টগ্রামবাসী আশা করে, এবার হোল্ডিং ট্যাঙের যন্ত্রণা থেকে মানুষ রেহাই পাবে।

সুরক্ষা পরিষদ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে, বাড়িভাড়ার ওপর গৃহকর পৃথিবীর কোথাও না থাকলেও গলাকাটা হোল্ডিং ট্যাঙ চাপিয়ে দেওয়ার ফলে ৫ হাজার টাকার গৃহকর এক লাফে ১ লাখ টাকা হয়ে যায়। এরপর আপিলের নামে কর কমিয়ে দেওয়ার কথা বলে শুরু হয় কর্পোরেশনের ঘুষ বাণিজ্য। এসব প্রেক্ষিতে সুরক্ষা পরিষদ সিটি মেয়রের কাছে কিছু দাবি উত্থাপন করেছে। দাবিগুলো হলো :

. দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাঙেশন রুলস ১৯৮৬ বাতিল করা, . বিগত সময়গুলোতে ঘুষ বাণিজ্যে কর্পোরেশনের যেসব কর্মকর্তাকর্মচারী জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় আনা, . গৃহকর আন্দোলনকারীদের ওপর যেসব মেয়র হামলামামলা নিপীড়ন চালিয়েছিলেন তাদের এবং তাদের অনুসারীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া, ৪ বাংলাদেশের মতো সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পন্ন রাষ্ট্রগুলোতে কীভাবে গৃহকর নেওয়া হয় তা পর্যালোচনা করে গৃহকর নেওয়ার ব্যবস্থা করা, , উন্নয়ন কাজ বেগবান ও জবাবদিহি করার জন্য চট্টগ্রামের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীনে অর্থাৎ এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা। এক্ষেত্রে সিটি গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ মজিবুল হক, মো. হারুনুর রশিদ, মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন জাফর, এসএম জিয়াউল হুদা, মোহাম্মদ ইদ্রিস আলম, মনিরুল্লা কাদের, হাসান মুরাদ শাহ, সৈয়দ সালাউদ্দিন শিমুল, মো. মাহফুজুল হক, আবদুল্লাহ আল আমিন, সাইফুল ইসলাম মানিক, আহমেদ জসিম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, সৈয়দ শফিউল আলম, মোরশেদ আলম এবং চট্টগ্রাম সুরক্ষা পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান মারুফ রুম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে
পরবর্তী নিবন্ধসভাপতি পদে তিন প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনার নির্দেশ