অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো যুবাদের এশিয়া কাপ জিতেছিল বাংলাদেশের যুবারা। এবার টানা দ্বিতীয়বারের মত টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিল টাইগার যুবারা। তবে এবারে ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে শক্তিশালী ভারতকে। যদিও টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এই ভারতকে হারিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। গতকাল দুবাই ইন্টরন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আরেক শক্তিশালী দল পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আজিজুল হাকিম তামিমের দল। বাংলাদেশের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং এর পর অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের ঝড়ো ব্যাটিং একেবারে সহজ জয় পাইয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। সে সাথে পৌঁছে দিয়েছে ফাইনালে। আগামী রোববার ফাইনালে ভারত এবং বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে।
টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। তার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেটা প্রমাণ করতে বেশি সময় নেয়নি টাইগার বোলাররা। বাংলাদেশের তিন পেসারের আগুনে বোলিং আগেই পুড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানের ব্যাটিং। এরপর আজিজুলের দুর্দান্ত ইনিংসে ছাই হয়ে উড়ে গেল পাকিস্তানের সব আশা। ৭ উইকেটের জয়ে টানা দ্বিতীয়বার এসিসি অনূর্ধ্ব–১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা মারুফ মৃধার। চতুর্থ ওভারেই পাকিস্তানী ওপেনার ওসমান খানকে ফেরালেন রানের খাতা খোলার আগেই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এবার পাকিস্তানের আরেক ওপেনার শাহজাইবকে ফেরান মারুফ উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করে। ৭ রানে নেই পাকিস্তানের দুই ওপেনার। তৃতীয় উইকেটে রিয়াজ উল্লাহ এবং অধিনায়ক সা্দ বেগ ৪২ রান যোগ করে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের বেশিদূর এগুতে দেননি আরেক পেসার ইকবাল হোসেন ইমন। ১৮ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ককে মারুফ মৃধার ক্যাচে পরিণত করেন ইমন। ৪ রান পর নাভিদ আহমেদ রান আউট হয়ে ফিরলে আরো চাপে পড়ে পাকিস্তান। সে চাপ থেকে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন ফারহান ইউসুফ। কিন্তু তার ৩২ রানের ইনিংসটাকে বড় হতে দেননি দেবাশীষ। তবে ৩২ বলের ইনিংসে একটি চার এবং তিনটি ছক্কা মেরেছেন ফারহান। এর পরের ব্যাটারদের দাড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে ৩৭ ওভারে মাত্র ১১৬ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান যুবারা। এর আগে তিন নাম্বারে নেমে ৬৫ বলে ২৮ রান করেন রিয়াজ উল্লাহ। বাংলাদেশের পক্ষে ইকবাল হোসেন ইমন ৭ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে পাকিস্তানের চার ব্যাটারকে ফেরত পাঠান। ২৩ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেণ মারুফ মৃধা। একটি করে উইকেট নিয়েছেণ ফাহাদ এবং দেবাশিস। ১১৭ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার কালাম সিদ্দিকী ফিরেন রানের খাতা খোলার আগেই। দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৮ রান যোগ করতে পারেন ওপেনার আবরার এবং অধিনায়ক তামিম। ১৭ রান করে ফিরেন আবরার। এরপর অধিনায়কের সাথে জুটি বাধেন শিহাব জেমস। আর তাতে দ্রুতই ঘুরতে থাকে রানের চাকা। বিশেষ করে অধিনায়ক তামিম রান তুলছিলেন ঝড়ের গতিতে। দুজন মিলে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। ৩৬ বলে ২৬ রান করে জেমস ফিরলেও অধিনায়ক তামিম ফিরেছেন দলকে জিতিয়ে। ১৬৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি টানা দ্বিতীয়বারের মত ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। ঝড়ো ব্যাটিং করা তামিম অপরাজিত ছিলেন ৬১ রানে। তার ৪২ বলের ইনিংসটিতে ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কার মার ছিল। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন।