চবিতে সনদ উত্তোলনে অটোমেশন ইমেইল সিস্টেম চালু হচ্ছে

শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবে এটি কার্যকর পদক্ষেপ

ইমাম ইমু | বৃহস্পতিবার , ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাঠ চুকিয়ে সনদ উত্তোলন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। আবেদন করা থেকে শুরু করে সনদ হাতে পাওয়া পর্যন্ত নানাভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেকের নামে বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে বানান ভুল নিয়েও অনেককে পড়তে হয় ঝামেলায়। নির্দিষ্ট সময়ে এসে সনদ না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অনেকের। পড়াশোনা শেষ করে অনেকে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করায় সশরীরে এসে সনদ উত্তোলন করা নিয়ে কষ্ট পোহাতে হয়েছে দীর্ঘদিন। এবার এসব কষ্ট আর থাকবে না। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অটোমেশন ইমেইল পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন। এতে করে শিক্ষার্থী যেকোনো জায়গায় বসে সনদের আবেদন, যাবতীয় সংশোধন এবং সনদ প্রস্তুত হলে জানতে পারবেন। আগামী রোববার এ পদ্ধতির উদ্বোধন করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সনদের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সংগ্রহের তারিখ জানানো হবে। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী।

প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, অনেক সময় শিক্ষার্থীরা দূরদূরান্ত থেকে সনদ সংগ্রহে এসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। আবেদন করার পর সনদ নিতে এসে দেখলেন তার মার্কশীটে ভুল রয়েছে কিংবা নামে ভুল। যার ফলে তিনি প্রয়োজনীয় সময় সনদ পাচ্ছেন না। এমন নানা বিড়ম্বনা কমাতে আমরা অটোমেশন ইমেইল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নিচ্ছি। যেখানে শিক্ষার্থীরা সনদের জন্য আবেদন করলে সেটি কম্পিউটারের ইনপুট করে রিসিভ করা হবে। এরপর কর্মকর্তারা চেকিং করে দেখবেন এরমধ্যে সবকিছু ঠিক আছে কি না। যদি ঠিক থাকে তাহলে সাকসেসফুলি রিসিভ জানিয়ে শিক্ষার্থীকে আবার রিপ্লাই দেওয়া হবে। ভুল থাকলে শিক্ষার্থীকে জানানো হবে। তিনি সেটি সংশোধন করবেন। এরপর আমরা তাকে একটি ডেট দিব সেই ডেটে এসে তিনি সনদ নিয়ে যাবেন।

সনদে অনেক সময় ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক ভুল হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের থেকে সংশোধন ফি নেওয়া হবে কি নাএ ব্যাপারে ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক বা কর্মকর্তা মাধ্যমে কোন শিক্ষার্থীর সনদে নাম বা অন্য কোন ভুল হলে এটা সংশোধনের জন্য শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়া ঠিক নয়। এটা বিভাগের থেকে বহন করা হবে। আমরা সেই সিস্টেম চালু করবো।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে অনেক সময় পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে দেখা গেছে। এরকম কোন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থেকে বিরত রাখার কোন নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি না এমন প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, কোন শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট থাকলে অন্য কোন শিক্ষার্থী দ্বারা তাকে পরীক্ষা থেকে বাধা দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহি করি। যদি কারো বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।

এই উদ্যোগ নিয়ে সাবেকবর্তমান শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত বলে জানান শিক্ষার্থীরা। সাবেক শিক্ষার্থী বেলায়েত হোসেন জানান, আমি অনার্সের সনদ তুলেছি। এর জন্য আমাকে তিনবার ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে যেতে হয়েছে। শুধু টাকা খরচ হয়েছে এমন না অনেক কষ্টও পোহাতে হয়েছে। আমাকে যে সময় দেওয়া হয়েছিল সে সময়ই আমি গিয়েছি কিন্তু তখন সনদ প্রস্তুত হয়নি। আমাকে ফেরত যেতে হয়েছে। এখন এ উদ্যোগ নেওয়ায় অনেক কষ্ট কমে যাবে। যে কেউ যেখানে থেকে সনদের জন্য আবেদন করতে পারবে। সংশোধন করতে পারবে। প্রস্তুত হলে সেটাও জানতে পারবে। চবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শামীম হোসাইন বলেন, আমরা এখন পড়াশোনা করছি। সনদ তোলার সময় এখনো হয়নি। কিন্তু আমাদের অনেক সিনিয়র ভাই সনদ তোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য কল দেন। অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় সাবেক শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবে এটি কার্যকর পদক্ষেপ। আশা করি এর কার্যকর ব্যবহার হবে এবং সত্যিকারভাবে কষ্ট লাঘব হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬২ ফুট উচ্চতার ‘প্লাস্টিক দানব’ রাখবে দূষণ রোধে ভূমিকা
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে মাদ্রাসা ছাত্র অপহরণ, দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি