তোমরা কি কখনো কল্পনা করেছো আফ্রিকা মহাদেশ এমন এক জায়গা যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার রয়েছে? সোনা, হীরা, তামা এবং অনেক ধরনের অমূল্য খনিজ আফ্রিকার মাটির নিচে লুকিয়ে আছে। এই অবিশ্বাস্য খনিজ সম্পদের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে আজকে আমরা কিছু মজার তথ্য জানবো।
১. সোনার খনি: আফ্রিকার সবচেয়ে বড় সোনার খনি দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতি বছর প্রায় ১,৮০০ টন সোনা উৎপাদন করে যা বিশ্বের সোনার মোট উৎপাদনের প্রায় ১০ ভাগ। দক্ষিণ আফ্রিকার ‘গোল্ডেন মাইল’ এলাকাটি সোনার খনির জন্য বিখ্যাত এবং এই অঞ্চলের কিছু খনি পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর খনি।
২. হীরার ভাণ্ডার: হীরার জন্য আফ্রিকা অন্যতম প্রধান উৎস। কঙ্গো, বতসোয়ানা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা হীরা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। ২০২২ সালে বিশ্বের মোট হীরার ৮৫ ভাগের বেশি উৎপাদন করেছে আফ্রিকা। কঙ্গোর ‘কোনে ডায়মন্ড মাইন’ এককভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরার খনি হিসেবে পরিচিত যেখানে প্রতি বছর প্রায় ২৮ মিলিয়ন ক্যারেট হীরা খনন করা হয়।
৩. তামার খনি: জাম্বিয়া এবং নামিবিয়া তামা উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত। জাম্বিয়ার ‘কপারবেল্ট’ অঞ্চলটি পৃথিবীর অন্যতম বড় তামার খনি হিসেবে পরিচিত। ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাম্বিয়া সাড়ে ৭ লাখ টন তামা উৎপাদন করেছে যা বিশ্বের তামার মোট উৎপাদনের প্রায় ১০ ভাগ।
৪. কোলটান (ট্যান্টালাম): কোলটান আফ্রিকার কঙ্গো এবং রুয়ান্ডায় পাওয়া যায়। এই খনিজটি স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপে ব্যবহৃত হয়। কঙ্গো বিশ্বের কোলটানের ৬০ ভাগ উৎপাদন করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৩ সালে কঙ্গো প্রায় ১ হাজার টন কোলটান উৎপাদন করেছে।
৫. বক্সাইটের ভাণ্ডার: বক্সাইট হলো অ্যালুমিনিয়ামের প্রধান উৎস। গিনি, সিয়েরা লিওন এবং জাম্বিয়াতে বিশাল পরিমাণ বক্সাইট পাওয়া যায়। গিনির ‘বক্সাইট মিন’ পৃথিবীর বৃহত্তম বক্সাইট খনি যেখানে ২০২৩ সালে প্রায় ৮০ মিলিয়ন টন বক্সাইট উৎপাদিত হয়েছে।
আফ্রিকার এই সব খনিজ সম্পদ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরিতে সাহায্য করে। সোনার গয়না, হীরার আংটি, তামার তার এবং স্মার্টফোনে ব্যবহৃত কোলটান এগুলোর সব কিছুই লুকিয়ে আছে আফ্রিকার মাটির নিচে। তাই আফ্রিকা শুধু একটি মহাদেশই নয়, বরং এটি একটি বিশাল খনিজ সম্পদের রাজ্যও বটে!