আনোয়ারায় শঙ্খ নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। অভিযানেও থামছে না বালু উত্তোলন। বর্তমানে আনোয়ারা উপজেলার শঙ্খ নদীর আশপাশের ২০ টির বেশি স্পট দখল করে চলছে বালু উত্তোলন। প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই একটি সিন্ডিকেট এ বাণিজ্য করছে। বর্তমানে শঙ্খ নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এতে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হতে চলেছে। সেই সাথে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ– বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের নামে বিশেষ একটি সিন্ডিকেট উপজেলার ১১ ইউনিয়নে শঙ্খ নদী ও আশপাশের এলাকায় রমরমা বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো। কিন্তু গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ১৫/ ২০ দিন বালু উত্তোলনের ব্যবসা বন্ধ থাকে। এরপর উপজেলার ২০ টির বেশি স্পটে রাতারাতি সিন্ডিকেটের নাম পরিবর্তন করে আগের নিয়মে বালু ব্যবসা পরিচালনা করছে নতুন সিন্ডিকেট। বর্তমানে আনোয়ারা উপজেলায় হাইলধর ইউনিয়নের চানখালী খাল, বরকল ব্রিজ ও শঙ্খ নদীর আশপাশের ৭টি স্পট, পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৈ খাইন নোয়া রাস্তা, বাথুয়াপাড়া, শিলারিয়াসহ আরো বিভিন্ন স্পটে বালুর ব্যবসা চলছে। বারখাইন ইউনিয়নের পূর্ব বারখািন, তৈলারদ্বীপ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান, বরুমচড়া ইউনিয়নে ৩টি, জুঁইদন্ডী ও রায়পুর ইউনিয়নের একাধিকসহ উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ২০টির বেশি পয়েন্টে রমরমা বালু ব্যবসা চলছে।
হাইলধর ইউনিয়নের বাসিন্দা নজরুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, দক্ষিণ ইছাখালী, বরকল ব্রিজসহ বিভিন্ন স্পটে প্রকাশ্যে বালু ব্যবসা চলছে। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করলেও এদের থামানো যাচ্ছে না।
জানা গেছে, এইসব সিন্ডিকেট বছরে কোটি কোটি টাকার বালুর ব্যবসা করলেও সরকার এক টাকাও রাজস্ব পায় না।
রায়পুরের বাসিন্দা জালাল উদ্দীনের অভিযোগ, অবৈধ ভাবে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে স্থানীয়দের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ভাঙা শুরু হয়েছে। বালু বহনকারী ভারী যানবাহনের কারণে বিভিন্ন সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনাও বাড়ছে। ধুলোবালির কারণে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুসাইন মুহাম্মদ জানান, আনোয়ারায় সরকারি ভাবে কোনো বালু মহল নাই। অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।