সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের সরকারি ১০ স্কুলে অনলাইনে ভর্তি আবেদন শেষ হয়েছে গত শনিবার। নগরের ১০টি সরকারি স্কুলের ২ হাজার ২৩৬টি খালি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৬টি। অর্থাৎ প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ৬২টি আবেদন পড়েছে। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গভ. মুসলিম হাইস্কুলে। ৩২৬টি আসনের বিপরীতে এ স্কুলে আবেদন পড়েছে ২২ হাজার ৭৬৩টি। দ্বিতীয় বেশি আবেদন পড়েছে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ স্কুলে ২১৬ আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ২০ হাজার ২৫৯টি। গত চার বছরের ন্যায় মতো এবারও লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুল নির্ধারণ করা হবে। আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের স্কুল ঠিক করা হবে। গত ১২ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা টেলিটকের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করেছে। সারাদেশের সব আবেদন অনলাইনে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রমে দিতে পেরেছে।
জানা গেছে, ১০টি স্কুলে সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে পঞ্চম শ্রেণিতে। এতে আসন রয়েছে ১ হাজার ৪৬৪টি, এর বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৮০ হাজার ১২৮টি। অর্থাৎ প্রতি আসনের জন্য প্রায় ৫৫টি আবেদন পড়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৪৫৮টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৪৩ হাজার ৬০৭টি। অর্থাৎ প্রতি আসনের জন্য আবেদন পড়েছে প্রায় ৯৫টি। অষ্টম শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৪টি, আবেদন পড়েছে ১ হাজার ৭৮২টি। অর্থাৎ প্রতি আসনের জন্য ৬৪টি আবেদন পড়েছে। নবম শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৯৩টি, আবেদন পড়েছে ১৩ হাজার ৪১৯টি। অর্থাৎ প্রতি আসনের জন্য আবেদন পড়েছে ৪৬টি। ১০টি স্কুলে মোট সংরক্ষিত আসন রয়েছে ৫৮টি। এছাড়া নগরের তিনটি বেসরকারি স্কুলে আবেদন পড়েছে ৪ হাজার ৪১১টি। এ তিনটি স্কুলে খালি আসন রয়েছে ৬০২টি। প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ৭টি আবেদন পড়েছে। গতকাল রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন আজাদীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যে স্কুলে যত আবেদন এবং খালি আসন রয়েছে : গভ. মুসলিম হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ৮ হাজার ১৬৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৭টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১০ হাজার ৯৫১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি এবং নবম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৪৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ১০ হাজার ৩৬৭টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৭টি। ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ১৩ হাজার ২৩৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৬টি; নবম শ্রেণিতে ৬ হাজার ৩০২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৮টি। চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে আবেদন পড়েছে ৯ হাজার ১২২টি, আসন খালি রয়েছে ২১৮টি। নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৮ হাজার ৩৯৫টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৬টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১১ হাজার ৮৬৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি। চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৯ হাজার ৫৩৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৮টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৮ হাজার ৮৯৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি। বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৫ হাজার ১১৭টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৮ হাজার ৭৭টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০৯টি এবং নবম শ্রেণিতে ১ হাজার ৮১০টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ৫০টি। সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ৬ হাজার ৩৩২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১৯টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৮১৬টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২০টি। হাজী মুহা. মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ৭ হাজার ৭৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি। চট্টগ্রাম সরকারি মডেল হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ২ হাজার ৭৮১টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ৫১টি; অষ্টম শ্রেণিতে ১ হাজার ৭৮২টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৪টি এবং নবম শ্রেণিতে ১ হাজার ৬৬৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৬টি। এছাড়া তিনটি বেসরকারি স্কুলের মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) স্কুল এন্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩৬৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১১০টি; সপ্তম শ্রেণিতে ১১৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২১টি; অষ্টম শ্রেণিতে ৭৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৯টি এবং নবম শ্রেণিতে ৭৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ৩২টি। ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে ২ হাজার ১৩৩টি আবেদন পড়েছে, খালি আসন রয়েছে ৩০০টি। সিলভার বেলস্ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ৩০৩টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১৫টি; চতুর্থ শ্রেণিতে ২৪৫টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১৫টি; পঞ্চম শ্রেণিতে ৩৩০টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৫টি; ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩৬৮টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ২৫টি; সপ্তম শ্রেণিতে ১২৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০টি; অষ্টম শ্রেণিতে ১১৯টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০টি এবং নবম শ্রেণিতে ১৫৪টি আবেদন পড়েছে, আসন খালি আছে ১০টি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, নগরের ১০টি সরকারি স্কুলের ২ হাজার ২৩৬টি খালি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৬টি। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গভ. মুসলিম হাইস্কুলে। আগামী ১২ ডিসেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছুদের স্কুল ঠিক করা হবে। শিক্ষার্থীরা টেলিটকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দ করে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করেছে। সারাদেশের সব আবেদন অনলাইনে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ভর্তির ব্যাপারে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই অনুসারে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।