রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের দুর্গম জঙ্গল পারুয়া এলাকার সাথে রাঙামাটির কাউখালী সোনাইছড়ির নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সোনাইছড়ি খালের উপর এলজিইডির মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ব্রিজ। এছাড়া এই ব্রিজের সাথে পারুয়া থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের কাজও চলমান রয়েছে। ব্রিজ ও সড়কের কাজ শেষ হলে রাঙ্গুনিয়ার পারুয়া দিয়ে রাঙামাটির কাউখালীর নতুন সড়ক যোগাযোগ হবে। এতে উপকৃত হবেন পারুয়া ইউনিয়নের ৫–৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পাশাপাশি দুই উপজেলার হাজার হাজার জনসাধারণ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাঙ্গুনিয়ার সাথে কাউখালীর বিকল্প সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে দুই উপজেলা সীমান্তের সোনাইছড়ি খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ব্রিজটির উপরিভাগের স্লেপ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। এদিন কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম।
তিনি জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ার সীমান্তবর্তী সোনাইছড়ি খালের শাখা খালের উপর এলজিইডির প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস প্রজেক্টের আওতায় ২৬ মিটার দীর্ঘ একটি পিএসসি গার্ডার নতুন ক্যাটাগরির ব্রিজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ২ কোটি ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৬ টাকা চুক্তিমূল্যে ব্রিজটি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যেই ব্রিজের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
জানা যায়, পারুয়া ডিসি সড়কের সুবেদার মসজিদ থেকে জাহেদ চেয়ারম্যান বাড়ির পাশ দিয়ে মধ্যপারুয়া নিজাম আউলিয়া মাজার হয়ে জঙ্গল পারুয়া দিয়ে কাউখালী সোনাইছড়ি বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপন করছে। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির ইতিমধ্যেই পারুয়া ডিসি সড়ক থেকে চার কিলোমিটার অংশ কার্পেটিং করার কাজ চলমান রয়েছে। বাকি অংশ এইচবিপি দ্বারা উন্নয়নে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে জঙ্গল পারুয়ার মানুষ অনেকাংশে পিছিয়ে রয়েছেন। শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে শুরু করে দুর্গম যোগাযোগের কারণে কৃষি কাজেও তাদের নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। তবে সড়ক যোগাযোগ হলে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি রোধ হবে। সড়কটি সম্পূর্ণ হলে এতদ অঞ্চলের যোগাযোগে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। পিছিয়ে পড়া ওই এলাকার পাহাড়ি–বাঙালির জীবন জীবিকার আমূল পরিবর্তন হবে বলে তিনি জানান।
আব্দুর রহিম নামে স্থানীয় এক কৃষক জানান, জঙ্গল পারুয়া এলাকার কয়েক সহস্রাধিক বাসিন্দা সড়ক যোগাযোগের অভাবে মানবেতর দিন অতিবাহিত করছিল। অসুস্থ হলে রোগীদের দোলনায় করে কাঁধে চড়িয়ে নিতে হতো। মাইলের পর মাইল হেঁটে খালের উপর ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে চলাচল করত এতদ অঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে সড়ক যোগাযোগ হতে যাওয়ায় খুশি পাহাড়ি–বাঙালি সকলে।