বাঁচানো গেলনা দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত আওয়ামীলীগ কর্মী দেলোয়ারকে। ফেসবুক লাইভে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত দেলোয়ার হোসেন (৩৯) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের (আইসিইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত আওয়ামী লীগের সমর্থক দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরতি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী এবং তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
গত ১৮ই নভেম্বর রাতে বাড়ির সামনে থেকে তাঁকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন স্বজনেরা।
নিহত দেলোয়ারের বড় ছেলে মো. সাইমন দৈনিক আজাদীকে বলেন, হামলার কয়েকদিন আগে তাঁর বাবা ফেসবুক লাইভে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বলেন। এরপর দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে কল করে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। এরই সূত্র ধরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর বাবার বুকে চারটি, উরু ও পায়ের গোড়ালিতে ১০-১২টি ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ছাড়া ঘাড়ের রগ কেটে ফেলা হয়। চোখও নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল হামলাকারীরা।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৮ই নভেম্বর রাতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন দেলোয়ার। এ সময় ১০-১২ জন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত তাঁর বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় দেলোয়ারকে অটোরিকশায় তুলে পাশের আমিলাইশ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের মসজিদ এলাকায় নিয়ে যায় তারা।
পরে মৃত ভেবে সড়কে ফেলে হামলাকারীরা কাঞ্চনা ইউনিয়নের দিকে পালিয়ে যায়। হামলার সময় কয়েকটি অটোরিকশা নিয়ে আরও ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত সড়কে দাঁড়িয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তারা চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী দেলোয়ারকে উদ্ধার করে শুরুতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১৯ নভেম্বর ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চট্টগ্রামের বেসরকারি ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত দেলোয়ারের ছেলে সাইমন বলেন, আইসিইউ সংকটের কারণে তাঁর বাবাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়েছিলেন। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় আবারও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সোমবার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে উক্ত হামলার ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত সাতকানিয়া থানায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। সাতকানিয়া থানার ওসি মোঃ মোস্তফা কামাল খান দৈনিক আজাদীকে বলেন, দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত দেলোয়ার হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে সংবাদ পেয়েছি। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোন ধরনের মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেনি। মামলা দায়েরের পর এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।