বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কখনও ‘ভারতবিরোধী ছিল না’ বলে মন্তব্য করে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এটি অপপ্রচার’। তিনি বলেছেন, জামায়াতকে ভুলভাবে উপস্থাপন করতে সুচিন্তিতভাবে, মিথ্যা ও অপপ্রচার করা হয়েছে।
কারও সঙ্গে বৈরিতা না করে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বই দলটির আন্তর্জাতিক নীতি বলেও জামায়াত প্রধানের ভাষ্য। সমতা ও সম্মানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে তিনি বলেছেন, পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে ভারতের কাছ থেকেও আমরা একই আচরণের প্রত্যাশী। খবর বিডিনিউজের।
সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়ার মহুয়া চ্যাটার্জিকে সাক্ষাৎকার দেন শফিকুর রহমান। সেখানেই তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়সীমা ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে ভারতীয় পত্রিকাটি। জমায়াত আমির বলেন, তারা নির্বাচন ও অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চান না।তারা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে ভোট চান।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের মত ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়ে এলেও জামায়াতে ইসলামী ও আরও কিছু দল এখন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছে। এই পদ্ধতিতে কোনো দল সারাদেশে যত শতাংশ ভোট পাবে, সংসদেও তারা তত শতাংশ আসন পাবে। তবে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এতে আপত্তি জানাচ্ছে। বিএনপি বিশেষ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানালেও শফিকুল এই দাবির সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, জামায়াত ইসলামিক আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আধুনিক, উদার আর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক নীতি ও কার্যক্রমের ক্ষেত্রে জামায়াত যৌক্তিক, আনুপাতিক ও মধ্যমপন্থার দৃষ্টিভঙ্গির চর্চা করে। সুনির্দিষ্টভাবে যদি বলি, বিএনপি জামায়াতের দীর্ঘদিনের মিত্র। ফলে বিএনপিও আমাদের মধ্যমপন্থার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ভালোভাবে জানে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কখনও ভারতবিরোধী ছিল না। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এই ধারণা গড়ে উঠেছে। জামায়াতকে ভুলভাবে উপস্থাপন করতে সুচিন্তিতভাবে, মিথ্যা ও অপপ্রচার করা হয়েছে। সমতা ও সম্মানের ওপর ভিত্তি করে ভারতসহ প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে আমরা ভালো সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জামায়াত ইসলামীর আন্তর্জাতিক নীতি হল, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’। পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে ভারতের কাছ থেকেও আমরা একই আচরণ প্রত্যাশী। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে জামায়াত ইসলামীর দারুণ সম্পর্ক। সব নাগরিককে সমানভাবে বিবেচনা করে জামায়াত। সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরুর ধারণায় আমরা বিশ্বাস করি না। হিন্দু বা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার ইতিহাস নেই জামায়াতের। বরং বিভিন্ন পালা–পার্বণে হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সহযোগিতার ভূমিকা পালন করেছে।