জীবনের শেষ পরিণতি সম্পর্কে আমরা পৃথিবীর কেউ জানি না। কে কখন কোথায় কীভাবে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরকালের অনন্তকাল জীবনে পাড়ি জমাবে সেটা একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তাই জানেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মৃত্যু একটি অনিশ্চিত নিশ্চিত গন্তব্য। সাম্প্রতিককালে দেখা যায় প্রতিদিন হার্ট অ্যাটাক এবং সড়ক দুর্ঘটনা, কিছু দিন পর পর নৌ ও অগ্নি দুর্ঘটনায় একদম সুস্থ সবল টগবগে অসংখ্য মানুষ ঝরে যাচ্ছে। যাদের মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগেও কেউ এমনটা মাথায় পর্যন্ত আনতে পারত না। আদর্শের বিশ্বমানব বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর একটি হাদিস আমি ব্যক্তিগত জীবনে খুব বেশি মেনে চলার চেষ্টা করি। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘কেউ যদি কারও দিকে অন্যায়ভাবে চোখ রাঙিয়ে তাকায়, আল্লাহ সেটার জন্য বিচারকার্য দিবসে তাকে জিজ্ঞেস করবেন। যে, কেন চোখ রাঙিয়ে তাকিয়েছিলে?’ খুব বেশি গভীরভাবে চিন্তা বিশ্লেষণের দরকার নেই। সহজভাবেই বোঝা যায় কেউ অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু বলা এবং করা দূরের কথা সামান্য চোখ রাঙিয়ে তাকালেই তাকে এটা নিয়ে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। অন্যদিকে, হযরত উমর ফারুক (র.) বলেছেন, ‘তুমি তোমার ভাইকে কষ্ট দিও না। হতে পারে কাল তোমার অথবা তার শেষ দিন। তখন তাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য পাবে না’।
মনে রাখা দরকার, আল্লাহ তার হক কাউকে চাইলেই ক্ষমা করে দিতে পারেন। কিন্তু, মানুষের হক মানুষ ক্ষমা করার আগ পর্যন্ত তিনি (আল্লাহ) কখনো ক্ষমা করবেন না বলেছেন। সুতরাং, আমাদের উচিত প্রতিটি দিন এবং সময়কে জীবনের শেষ মুহূর্ত ভেবে সবার সাথে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে অনন্তকালের জীবনটাতে যেন শান্তিতে থাকতে পারি সেই চেষ্টায় নিজেকে রত রাখা। আর, এই ভাবাবেগ যদি আমাদের মধ্যে জাগ্রত হয়, তাহলে আমাদের কথা ও কাজে অন্য কেউ কখনো কষ্ট পাবে না।