কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে ৩১ জনকে উদ্ধার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব–১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল এন্ড মিডিয়া) ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার দেবজিত পাল জানান, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি রয়েছে। বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। তাদের মধ্যে পুরুষ, নারী ও শিশু রয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ১২ নভেম্বর উখিয়ার মোছারখোলা এলাকার একলাছ মিয়া ও তার চাচাতো ভাই এবং ২/৩ জন বন্ধু কচ্ছপিয়া মেরিন ড্রাইভ এলাকায় ঘুরতে গিয়ে মানবপাচারকারী কর্তৃক অপহরণের শিকার হয়। জোরপূর্বক তাদের চোখ বেঁধে ফেলে এবং সেখান থেকে পাহাড়ের চূড়ায় একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। একলাছ মিয়া সেখানে একটা ছোট খুপড়ি ঘরে ৪০–৫০ জন নারী–পুরুষ ও শিশু দেখতে পায়। অতঃপর মানবপাচারকারীরা তাকে নির্যাতন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি এবং মুক্তিপণের টাকা না দিলে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দিবে বলে হুমকি দেয়।
একপর্যায়ে একলাছ মিয়ার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেও মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় গত ১৬ নভেম্বর তাকেসহ ১৫–২০ জনকে ট্রলারযোগে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে পাহাড়ের চূড়ার খুপড়ি ঘর থেকে বের করে সাগর পাড়ে ট্রলারের নিকট নিয়ে যাওয়ার সময়ে কৌশলে সে পালিয়ে আসে। কিন্তু তার সাথে থাকা চাচাতো ভাইসহ অন্যান্যরা পাচারকারীদের হেফাজতে থাকায় তাদের উদ্ধারের জন্য র্যাবের সহায়তা কামনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় জিম্মিদের উদ্ধারসহ মানবপাচারকারীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই অংশ হিসেবে অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধার এবং ২ পাচারকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধারকৃতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।