জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদদের নামে উপজেলা পর্যায়ে ২২০টির বেশি স্টেডিয়াম স্থাপন হচ্ছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ স্টেডিয়ামগুলো স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য নির্মিত ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ খেলার মাঠের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।
আগামী ২০২৫ সালের পাঠ্যবইতে জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থান নিয়ে একটি অধ্যায় সংযোজন করা হচ্ছে এবং যেখানে শহীদদের স্মৃতিকথা লেখা থাকবে বলেও জানান উপদেষ্টা। এছাড়া পরবর্তী বছরের পাঠ্যবইতে যেন জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বপূর্ণ স্মৃতিগুলোকে যথাযথভাবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিচ্ছে বলেও জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বপ্রাপ্ত এই উপদেষ্টা।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের ২২০টির অধিক উপজেলা স্টেডিয়াম হবে। আমরা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেকটা স্টেডিয়ামের নামই সেই উপজেলায় আমাদের যারা শহীদরা রয়েছেন তাদের নামে হবে। আমরা এই উদ্যোগটা নিচ্ছি কেন না আমরা চাই যারা জীবন দিয়ে এক সীমাহীন ফ্যাসিবাদ থেকে আমাদের মুক্ত করেছে, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি, দেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন দেখছি, রাষ্ট্র সংস্কারে সবাই অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছি তাদেরকে যেন আমরা কখনও ভুলে না যাই, বাংলাদেশ কখনও ভুলে না যায়। সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা এই ক্ষুদ্র প্রয়াস নিচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা স্টেডিয়ামের নাম ‘আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম’, টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামের নাম জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে টাঙ্গাইলের পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ মারুফের নামে করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ধানমন্ডিতে গুলির আঘাতে নিহত হন রেসিডেনসিয়াল মডেলে কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ। তার নামে বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই ইসাডোর কান বা লুই আই কানের ডিজাইন করা জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য নতুন করে নির্মিত এ খেলার মাঠের উদ্বোধন করা হল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ্। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মা ফারহানা দিবা।
অনুষ্ঠানে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া ও বোন সায়মা ইসলাম ফারিন জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থান ও শহীদদের বীরত্ব নিয়ে পাঠ্যবইতে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যেউপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমার জানা মতে আমাদের ২০২৫ এর যে পাঠ্যপুস্তক আসছে… যদিও খুব সময় স্বল্পতার কারণে অন্তর্ভুক্তিটা হয়তো এতটা দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে না কিন্তু একটা চ্যাপ্টার জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে থাকবে, যেখানে আমাদের শহীদদের স্মৃতি কথা লেখা থাকবে। আমাদের পরিকল্পনা আছে পরবর্তী বছরের যে পাঠ্যপুস্তক সেখানে যেন জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শিখতে পারে, পড়তে পারে সেজন্য যথাযথভাবে স্টোরিগুলোকে, স্মৃতিগুলোকে আমরা তুলে ধরতে পারি সে প্রচেষ্টা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রয়েছে।