আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বেশ ভালই নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের। বোলারদের দারুণ বোরিং এর পর টপ অর্ডারের ব্যাটাররাও দারুণ ব্যাটিং করছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন যেন সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। বাংলাদেশ যেন জোর করেই হেরেছে এই ম্যাচে। টসের সময় বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন তিনি বলেছেন প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে তাদের। ম্যাচ শেষেও তিনি বলেছেন একই কথা। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, দিনটি তাদের পক্ষে ছিল না। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে বুধবার আফগানদের কাছে ৯২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। টস হেরে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ দারুণ বোলিংয়ে প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছিল আফগানিস্তানকে। কিন্তু বিপর্যয় সামলে তারা ২৩৫ রান পর্যন্ত পৌঁছে যায়। শান্ত বলেন বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করলেও পরের দিকে খেই হারিয়ে ফেলেছেন বোলাররা। কৃতিত্ব দিলেন তিনি আফগানদের উদ্ধার করা দুই ব্যাটসম্যানকেও। শান্ত বলেন আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছিল। প্রথম ১৫–২০ ওভার আমরা খুবই ভালো বোলিং করেছি। তবে মাঝের সময়টায় আমরা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারিনি আমরা। উইকেটে বাউন্স ছিল নিচু। আমাদের কেবল প্রয়োজন ছিল লম্বা সময় ধরে সঠিক জায়গায় বল রেখে যাওয়া। পাশাপাশি নবি যেভাবে ব্যাট করেছেন বলতে হবে তিনি দুর্দান্ত খেলেছেন। হাশমাত ও শাহিদি দারুণ ব্যাট করেছেন।
প্রথমে ৩৫ রানে ৪ উইকেট ও পরে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ১০৪ রানের জুটি গড়েন হাশমাতউল্লাহ শাহিদি ও মোহাম্মাদ নবি। ৫২ রানে আউট হন আফগান অধিনায়ক শাহিদি। ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সের নবি ৭৯ বলে করেন ৮৩ রান। রান তাড়া করতে নেমে একসময় জয়ের সম্ভাবনা ভালোভাবেই জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান দ্রুত ফিরলেও দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারের (৩৩) সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটিতেও অর্ধশত পার হয়ে যায় বাংলাদেশ অধিনায়কের। এরপরই ছন্দপতন। সেখানে শান্ত কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নিজেকেই। তিনি বলেণ আমার মনে হয়, আমার উইকেটই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। কারণ আমি থিতু হয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া মিরাজ, সৌম্য, আমরা ৩০–৪০ রান করে আউট হয়েছি। এই ধরনের কন্ডিশনে আরও লম্বা সময় ব্যাট করা প্রয়োজন ছিল। আজকের ব্যাটিংয়ে এটিই ছিল মূল সমস্যা। ৪৭ রান করে শান্তর বিদায়ের একটু পর মিরাজ ফিরেন ২৮ রান করে। ভয়াবহ ধসে এরপর ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। ২ উইকেটে ১২০ রানে থাকা দল গুটিয়ে যায় ১৪৩ রানেই।
বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেওয়ার আফগান নায়ক আল্লাহ মোহাম্মাদ গাজানফার। ১৮ বছর বয়সী স্পিনার ৬ উইকেট নেন ২৬ রানে। এর মধ্যে শেষ স্পেলে ৫ উইকেট শিকার করেন কেবল ৪ রান দিয়ে। গাজানফার ও আফগান বোলারদের জন্য বিশেষ প্রশংসা শোনা গেল শান্তর কণ্ঠে। আফগানিস্তানের সবসময়ই অনেক রহস্য–স্পিনার থাকে। তবে তাদের সবাই খুব ভালো বল করেছে। বিশেষ করেই গাজানফার সত্যিই ভালো করেছে।
পরের ম্যাচের প্রত্যাশার প্রসঙ্গে শান্ত বলেন, প্রস্তুতির ঘাটতি তিনি দেখেন না। সিরিজে ফেরার আশাও তার প্রবল। শান্ত বলেন আসলে প্রস্তুতি আমাদের দুর্দান্ত ছিল। তবে বলতে পারি দিনটি আমাদের ছিল না। আশা করি পরের ম্যাচে আমরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচটি আগামীকাল শনিবার। ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।