বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আমান উল্লাহ আনুকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুমের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বাঁশখালীর ৬ আওয়ামী লীগ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৬ আওয়ামী লীগ নেতা আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক মো. শহীদুল ইসলাম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তারা হলেন ছনুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর কবির, ইউনিয়ন মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আবদুল আজিজ টিপু, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আরফাতুল ইসলাম চৌধুরী এমরান, ছনুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, শেখেরখীল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদু সাত্তার ও ছনুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুল মোমেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ছনুয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আমান উল্লাহ আনু হত্যা মামলায় ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদ–সহ ১০ জন আসামিকে ৬ সপ্তাহের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় হাইকোর্ট। এ সময় তাদেরকে ৬ সপ্তাহ পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য বলা হয়। গতকাল ৬ আসামি চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্নসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহত আমান উল্লাহ আনুর বড় বোন মমতাজ বেগম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালী ফেরার পথে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে আমান উল্লাহ আনুকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর তাকে একটি অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয় এবং মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি আনোয়ারা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়, কিন্তু মুক্তিপণ দেওয়ার পরও আমান উল্লাহ আনুকে ছাড়া হয়নি।
৩ মার্চ আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিটে আমান উল্লাহ আনুকে হত্যা করা হয় বলে সূত্রে জানা যায়। মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, মমতাজ বেগম ২০১৯ সালের ৪ মার্চ চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর অভিযোগ করেন। সেখানে কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে আনোয়ারা থানাকে তদন্তভার গ্রহণের পরামর্শ দেয়। আসামিদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে বাদী তদবির করতে না পারায় মামলাটি পরবর্তীতে ২০৩ ধারায় খারিজ হয়।