দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। কিন্তু একটি পক্ষের প্রতিবাদ আর সাকিব পক্ষের প্রতিরোধ সব মিলিয়ে তার নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা না পাওয়ায় সাকিব আসতে পারেননি দেশে। ফলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটা খেলা হয়নি সাকিবের। শুধু তাই নয় তাতে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই টেস্ট সিরিজ শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের একটি ওয়ানডে সিরিজ রয়েছে বাংলাদেশের। এই সিরিজে সাকিব থাকবেন কি না তা নিয়েও চলছিল জল্পনা। তবে গতকাল বুধবার জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় জানিয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে চান না সাকিব। তিনি জানিয়েছেন এই সিদ্ধান্ত সাকিব নিজেই জানিয়েছেন। বিসিবি সভাপতি বলেন সাকিব অনুশীলনে নাই। তার হয়তো কিছু সময় দরকার। যদিও এখনো দল ঘোষণা করা হয়নি। তবে মনে হচ্ছে আগামী সিরিজে তার খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
বিসিবি সভাপতি বলেন মনে হচ্ছে তার মানসিক একটা বিশ্রাম দরকার। যদিও এর মধ্যে আবুধাবীতে একটা টি–টেন টুর্নামেন্ট আছে। যদিও সে টুর্নামেন্টের জন্য এখনো তাকে অনুমতি দেয়নি বোর্ড। কারন সাকিব বাংলাদেশের জন্য খেলতে পারে অন্তত ৫০ ওভারের খেলায়। আমাদের সামনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু টুর্নামেন্ট রয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে তিনটা ওয়ানডের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তবে মনে হচ্ছে এই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটা সে মিস করবে। বিসিবি সভাপতি বলেন সাকিব দেশে ফিরতে পারছেন না নিরাপত্তার কারণে।
এ অবস্থায়ও তাকে চাইছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। অন্তত ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তাকে দলে দেখতে চান বিসিবি সভাপতি। কিন্তু দেশে না আসতে না পারলেতো তাকে বাইরে থেকে খেলা চালিয়ে যেতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বলেন এটার জন্য আমরা কাজ করছি। আসলে ঢাকায় টেস্ট খেলাটা সাকিবের অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে উপর মহল থেকে তার নিরাপত্তার বিষয়টি জানানো হয়। এখানে আসলে আমার কিংবা বোর্ডের কোন ভূমিকা ছিল না। আমি মাঝখানে ছিলাম মাত্র।
পেশাদার খেলোয়াড়রা যারা এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে তারা অভ্যস্তও হয় সেভাবে। আজকে খেলবে, রাতে কম ঘুম হবে, পরের দিন অনুশীলন করে আবার ম্যাচ খেলবে। আমার মনে হয় খেলোয়াড় হিসেবে সাকিব এখন দলের সাথে অনুশীলন করতে পারছেনা। তবে এটা ঠিক যে, আবার যদি সে অনুশীলনে ফিরতে পারে তাহলে তার জণ্য ম্যাচে ফেরাটা কঠিন হবেনা মোটেও। আর নির্বাচক প্যানেল বা বোর্ড যদি ভাবে যে সে খেলতে পারে তাহলে তার খেলতে বাধা থাকার কথা নয়। একজন খেলোয়াড় যখন খেলতে পারবেনা বা তার নিরাপত্তা নিয়ে যখন তাকে টেনশনে থাকতে হবে তখন সে মানসিকভাবে খারাপ অবস্থায় থাকবেই। একজন খেলোয়াড় হিসেবে সেটা আমি বেশ ভালভাবেই বুঝি। একজন খেলোয়াড় যে যতই শক্ত মানসিকতার হোক না কেন তার কঠিন সময় পার করতেই হবে। এখানে সাকিব যেহেতু তার শেষ টেস্টটা খেলতে পারেনি কাজেই সে আপসেট থাকবে। যেহেতু সে অনেক পেশাদার একজন ক্রিকেটার সেহেতু হয়তো সে ভেবেছে অনুশীলন করে নাই, এই সিরাজে তার খাতাটা তার জন্য বা দেশের জন্য ভালো হবে না। তবে আমার বিশ্বাস সে আবার প্রস্তুত হয়ে ফিরবে। যেহেতু সামনে একটা টি–টেন টুর্নামেন্ট আছে, সেখানে যদি সে খেলতে পারে তাহলে সে প্রস্তুত হতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে আমার মনে হয় সাকিব এই টুর্নামেন্ট খেলে দেখবে খেলোয়াড় হিসেবে কামব্যাক করতে পারে কি না।